<p>গ্রামবাংলার অন্যতম ঐতিহ্যের একটি খেজুরের রস। শীত যত বাড়তে থাকে, খেজুরের রসের চাহিদাও তত বাড়ে। বর্তমানে গ্রাম ছাপিয়ে ঢাকার বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটেও পাওয়া যাচ্ছে খেজুরের রস। খেজুরের রস যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, তেমন এর রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও নলেন গুড়। খেজুরের রস এবং গুড়ের উপকারী দিকের লিস্টও বেশ লম্বা।</p> <p>খেজুর রসে প্রচুর এনার্জি বা শক্তি রয়েছে। এই রসকে বলা হয় প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক। খেজুর রসে দ্রবীভূত গ্লুকোজের পরিমাণ প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। পাশাপাশি এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, সহজপাচ্য ফ্যাট এবং খনিজ বা মিনারেল। খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বা লৌহ থাকে। নিয়মিত অল্প পরিমাণে খেজুর গুড় খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক থাকে, এমনকি অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ হয়। খেজুর রসে পটাশিয়াম এবং সোডিয়ামও পাওয়া যায়, যা পেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে মানবদেহে ক্লান্তি এবং অবসন্নতা ভর করে। তাই খেজুর রসকে বলা হয় মন ভালো করার পানীয়।</p> <p>খেজুর রস প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শীতের দিনে শরীরকে গরম রাখে এটি। ফলে সর্দি কাশি থেকে পাওয়া যায় রেহাই। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কিংবা ওজন দূর করতেও সাহায্য করে খেজুর রস। চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুর গুড় খাওয়া যেতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় বৃদ্ধি করে শরীরের মেটাবলিজম। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও খেজুর রস কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এমনকি হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় খেজুর রস।</p> <p>ডায়াবেটিস রোগীদের খেজুরের রস কিংবা গুড় না খাওয়াই ভালো। খেজুর রস খাবার উৎকৃষ্ট সময় সকাল বেলা। দিনের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় নানা ব্যাকটেরিয়ারও জন্ম হয়। বেশ কিছু বছর আগে নিপা ভাইরাসের ভয়াবহতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তাই খেজুর রস উৎপাদনে গাছিদের সাবধানতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।</p>