<p>আল্লাহ তাআলা মুমিনদের দুনিয়া ও আখিরাতে মর্যাদাবান করেছেন। যারা ইহকালে ঈমান আনে এবং ঈমানের দাবি অনুসারে জীবন পরিচালনা করে তাদের জন্য পরকালে চিরস্থায়ী জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা বলে, আমরা যদি মদিনায় প্রত্যাবর্তন করি তবে সেখান থেকে সবলরা (সম্মানীরা) অবশ্যই দুর্বলকে (হীনদের) বহিষ্কার করবে। শক্তি (সম্মান) তো আল্লাহ, তার রাসুল ও মুমিনদেরই; কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।’ (সুরা : মুনাফিকুন, আয়াত : ৮)</p> <p>মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় পাত্র। আখিরাতে তাদের চিরশান্তির স্থান জান্নাত দান করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে ফিরদাউস জান্নাত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ১০৭-১০৮)</p> <p><strong>মুমিনের সম্মান কাবাঘরের চেয়েও বেশি</strong> : আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুল (সা.) কাবাঘর তাওয়াফ করছিলেন। তিনি (কাবাকে লক্ষ্য করে) বলেন, ‘ওহে আল্লাহর ঘর, তুমি কতই পবিত্র এবং তোমার সুঘ্রাণ কতই না মনমাতানো! তুমি কতই না মর্যাদাবান, কত সম্মানের অধিকারী! নিশ্চয়ই সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রাণ! একজন মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তোমার চেয়েও অধিক মর্যাদাবান, তাদের সম্পদ ও রক্ত অধিক সম্মানিত। এ জন্য আমরা মুমিনদের ব্যাপারে সর্বদা সুধারণা পোষণ করি।’ (ইবনে মাজাহ : ২/১৮৩০)।</p> <p><strong>মুমিনের সম্মান ফেরেশতার চেয়েও বেশি</strong> : আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ করে সৃষ্টি করেছেন। আদমসন্তানকে তিনি অন্যান্য সৃষ্ট জীবের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদের স্থলে ও জলে চলাচলের জন্য বাহন দান করেছি। তাদের উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। (সুরা : বনি ইসরাঈল : ৭০)</p> <p>ফেরেশতা, জিন, মানব ইত্যাদি আল্লাহর সৃষ্টি। জিনজাতির চেয়ে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অনেক বেশি। আদমসন্তানের মধ্যে যারা পরিপূর্ণ মুমিন অলি-আউলিয়া তাদের মর্যাদা সাধারণ ফেরেশতার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আর নবী-রাসুলগণ হলেন মর্যাদাসম্পন্ন ফেরেশতা তথা জিবরাইল (আ.), মিকাইল (আ.), ইসরাফিল (আ.) ও আজরাইল (আ.)-এর চেয়েও বেশি মর্যাদাবান।</p> <p>রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে আবেদন করলেন যে হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি মানবজাতিকে দুনিয়া দান করেছেন, তারা পানাহার করে, বস্ত্র পরিধান করে আর আমরা সদাসর্বদা আপনার প্রশংসা করি ও তাসবিহ পাঠ করি। আমরা পানাহার করি না, কৌতুকও করি না। তাই মানবজাতিকে যেভাবে দুনিয়া দান করেছেন, তেমনিভাবে আমাদের আখিরাত দান করুন। আল্লাহ তাআলা তাদের উত্তরে বলেন, যাদের আমি কুদরতি হাতে সৃষ্টি করেছি তাদের সমতুল্য এমন কাউকে করব না, যাদের আমি ‘কুন’ (হও) শব্দ দ্বারা সৃষ্টি করেছি।’ (আল মুজামুল আউসাত : ৭/৯৯)</p>