<p> <strong>ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা</strong></p> <p>ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বলতে বোঝায়, শরীরের কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি কতটা সংবেদনশীল বা কার্যকর। ইনসুলিনে সংবেদনশীলতার মাত্রা বেশি হলে তা শরীরের কোষগুলো রক্তের গ্লুকোজকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে।  অর্থাৎ রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করতে সাহায্য করে। ইনসুলিন নিজেই একটি হরমোন, যা অগ্ন্যাশয়ের বিশেষ কোষ দ্বারা তৈরি হয়, যাকে বিটা কোষ বলা হয়। </p> <p>ইনসুলিনের কাজ হলো রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করা। খাবার থেকে নিঃসৃত শর্করা হজমের পর কোষে প্রবেশ করতে দেয় ইনসুলিন। শরীরের কোষগুলো বন্ধ থাকে।  ইনসুলিন কোষগুলোর দরজা খুলে দেয়। এর ফলে চিনি এবং অন্যান্য পুষ্টি এর মধ্য দিয়ে যেতে পারে। ইনসুলিন যদি কাজ না করে, কোষগুলোর সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষমতা থাকে না। ফলে রক্তে চিনি বা গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়।</p> <p><strong>ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা ইনসুলিন প্রতিরোধী</strong></p> <p>ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা ইনসুলিন প্রতিরোধী হলো যখন শরীরের কোষে ইনসুলিন কাজ করে না। অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমারণ বাড়িয়ে দেয়। কোষে শর্করা বা পুষ্টিগুণ ঢুকতে পারে না। এটি ডায়াবেটিস হওয়ার এবং শেষ পর্যন্ত টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অগ্ন্যাশয় পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারলে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে এবং রক্তে গ্লুকোজ একটি স্বাস্থ্যকর মাত্রায় থাকে।</p> <p><strong>ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে যা করতে পারেন</strong></p> <p>ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করা এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে বা আছে।<br /> জীবনধারার পরিবর্তন এবং খাদ্যতালিকার পরিবর্তন ঘটিয়ে আমাদের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারি।</p> <p>** যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে, যাদের নেই বা যারা ঝুঁকিতে আছেন তাদের সবার জন্য ব্যায়াম খুব গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করা প্রয়োজন। যাদের চলাফেরায় সমস্যা তারা যেটুকু পারে সেটুকুই করতে হবে। এতে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের প্রয়োজনে ইনসুলিন নিতে হবে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে।</p> <p>** পর্যাপ্ত ঘুম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ছয় সপ্তাহে এক ঘণ্টা বেশি ঘুমিয়েছে, তাদের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বেশি বেড়েছে।</p> <p>** রোজা রাখলেও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে। আবার এটাকে সময় বেঁধে খাওয়াও বলতে পারেন। তাই রোজা রাখা শরীরের জন্য ভালো। সপ্তাহে এক দিন রোজা রাখতে পারেন।  </p> <p>** কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। কম স্যাচুরেটেড বা অসম্পৃক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। ফলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়বে।</p> <p>** আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। যদিও আঁশযুক্ত খাবার উদ্ভিদ থেকে আসে এবং এটিও এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট। শরীর পুরোপুরি এটিকে ভাঙতে পারে না। হজমেও একটু দেরি হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাওয়ার পরে হজমে দেরি হওয়াতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া ভালো। </p> <p>** সম্পূরক বা সাপ্লিমেন্ট খাবার খেয়েও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারেন। যেমন প্রোবায়োটিক, ওমেগা-৩, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। </p> <p>সূত্র : মেডিক্যাল নিউজ টুডে।</p> <p> </p>