<p style="text-align:justify">কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের থানাগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে এসেছে। গতকাল সোমবার থেকে কাজ শুরু করেছে করিমগঞ্জ থানা পুলিশও। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ভয় ও আতঙ্ক কাটিয়ে মানুষও ফিরছে স্বাভাবিক কাজকর্মে।</p> <p style="text-align:justify">মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম থানা, কয়েকটি মন্দির ও বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে জনজীবনে এমন স্বাভাবিক চিত্রই দেখা গেছে।</p> <p style="text-align:justify">সকালে মিঠামইনে গিয়ে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর ১৫ আর ই ব্যাটালিয়নের সদস্যরা স্পিডবোটযোগে হাওর ও নদীতে টহল দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সময় সেনা সদস্যদের মাইক দিয়ে জনগণকে কোনো ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামা কিংবা আইন-শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত না হওয়ার আহ্বান জানাতে দেখা যায়। একই সঙ্গে দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারীদেরও সতর্ক করা হয়। মিঠামইন উপজেলা সদরেও বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে সেনা সদস্যরা ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর নেন। তা ছাড়া কয়েকটি মন্দিরে গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকেও অভয় দেন তারা।</p> <p style="text-align:justify">মিঠামইন বাজারে মো. আলাউদ্দিন ও রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হওয়ায় আজ হাটের দিনে বাজার করতে এসেছেন। এক সপ্তাহ পরে বাজারে এসেছেন। ভয় ও আতঙ্কে বাজারে আসতেন না তারা। সেনাবাহিনী ও পুলিশের কার্যক্রম দেখে খুশি হয়েছেন। আজ অনেকটা নিরাপদ মনে হচ্ছে তাদের। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তারা এখন স্বস্তিতে রয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">দুপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা যৌথভাবে ইটনা উপজেলা সদরের শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ কেন্দ্রীয় মন্দির পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে শতভাগ নিরাপত্তার আশ্বাস দেন। এর আগে ইটনা থানা ঘুরে সেখানে থানার কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান থানার ওসি। তিনি এ সময় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে পুলিশি কার্যক্রমে গতি এসেছে বলেও জানান।</p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিনহাযের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ১৫ আর ই ব্যাটালিয়নের সদস্যরা জেলার মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রাম ও করিমগঞ্জের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে কাজ করছেন। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় চার উপজেলার চারটি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাস্তাঘাট ও নদীপথে টহল জোরদার করা হয়েছে। মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব কাজে স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরাও যুক্ত রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত কয়েক দিনে ওই সব এলাকায় কোনো ধরনের লুটপাট বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।</p> <p style="text-align:justify">ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম থানায় গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। সেখানে সেনা সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। স্থানীয় লোকজনও নানা ধরনের অভিযোগ নিয়ে থানায় যাচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">মিঠামইন থানার ওসি আহসান হাবিব, ইটনা থানার ওসি জাকির রব্বানি, অষ্টগ্রাম থানার ওসি শফিকুল ইসলাম ও করিমগঞ্জ থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তাদের থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। দু-চারজন এখনো যোগ দিতে পারেনি। তারা বৃহস্পতিবারের মধ্যে চলে আসবেন।</p>