<p style="text-align:justify">কোটা সংস্কার আন্দোলন কেড়ে নিয়েছে বকুল মিয়া (২৭) নামে এক রিকশাচালকের প্রাণ। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার দুই শিশু মাহাদী হাসান শুভ (১২) ও বুসরাত জান্নাত মিতুর (০৫) ভবিষ্যৎ। অকালেই স্বামী হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন বকুল মিয়ার স্ত্রী মনিকা বেগম। </p> <p style="text-align:justify">বকুল মিয়া শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার চাউলিয়া গ্রামের শামছুল হকের ছেলে। গত ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরার আজমপুর রেলগেটে কোটাবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় দুই সন্তানের পড়ালেখা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন মনিকা বেগম।  <br /> আজ বুধবার (৩১ জুলাই) সরেজমিনে গেলে নিহত বকুল মিয়ার পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললে উঠে আসে ওই দুই শিশুর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা। </p> <p style="text-align:justify">মনিকা বেগম জানান, তাদের অভাবের সংসার। কৃষিকাজ করে ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ আর সংসার চালাতেন। গেল ঈদের পর থেকে কাজ কম থাকায় ধারদেনা করতে হয়েছে তাকে।  সম্প্রতি বেড়ে যায় ঋণের টাকা। এই ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য গত ১২ জুলাই বকুল মিয়া যান ঢাকায়। থাকতেন দক্ষিণখান এলাকায়।</p> <p style="text-align:justify">তিনি রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন। প্রতিদিন মোবাইলে তিনি স্ত্রী মনিকা বেগমের সঙ্গে কথা বলতেন। তার সঙ্গে সর্বশেষ কথা কথা হয় গত ১৮ জুলাই সকালে। মোবাইল ফোনে তিনি মনিকাকে বলেছেন, কয়েক দিন পর বাড়ি আসবেন। পরিশোধ করবেন ঋণের টাকা। স্ত্রী-সন্তানের জন্য নিয়ে আসবেন নতুন কাপড়। কিন্তু তা আর হলো না। তিনি বাড়ি এলেন লাশ হয়ে। </p> <p style="text-align:justify">মনিকা বেগম বলেন, মোবাইল ফোনে খবর পাই। পরে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকার হাসপাতাল থেকে স্বামীর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসি। তার প্রশ্ন- ‘আমার স্বামীর কোনো দোষ নেই। কেন তারা গুলি কইরা মারল? এখন আমার ছেলেমেয়েকে পড়ালেখার খরচ কে দেবে? কিভাবে সংসার চালামু? আমার ছেলেমেয়ের পড়ালেখা এখন অনিশ্চিত।  </p> <p style="text-align:justify">স্থানীয় হুমায়ুন কবির বলেন, পরিবারটা এখন অসহায়। বকুল কাজ করে সংসার চালাত। ওর ছেলে-মেয়ে মাদরাসায় পড়ে। এখন ওদের দেখার কেউ নাই। </p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানা অফিসার ইনচার্জ কাইয়ুম খান সিদ্দিকী বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছি। </p> <p style="text-align:justify">গরজরিপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, বকুলের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই পরিবারটি গরিব। এক ছেলে এক মেয়ে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সহযোগিতা করব।</p>