<p>‘আল্লায় যদি মারে বাঁচানোর কেউ নেই। আর যদি আল্লায় করোনায় মৃত্যু রাখে তখন কেউ সামনেও আসবে না। তাই জীবনের শেষ ঈদ মনে করে মরার আগে পরিবার নিয়ে একটু আনন্দ করে যাই। যাতে কোনো আফসোস না থাকে। ছেলে-মেয়েদের স্কুল বন্ধ, খেলার মাঠে যেতে দিই না। দীর্ঘদিন ঘরে থেকে মোবাইলে আসক্তি বেড়ে কেমন জানি প্রতিবন্ধীদের মতো হয়ে যাচ্ছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে একটু ঘুরতে আসলাম।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সোনারগাঁয়ের পানাম নগরীতে ঘুরতে আসা রাফেছা বেগম। </p> <p>আজ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঐতিহাসিক পানাম নগরীতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় আশপাশে দল বেঁধে ঘুরছে তারা। নেই স্বাস্থ্যবিধি, নেই করোনার ভয়, মানছে না কেউ লকডাউন। সব কিছু উপেক্ষা করে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় মানুষের ঢল নেমেছে। ঈদের আনন্দসহ এলাকার সৌর্ন্দয উপভোগ করতে সোনারগাঁ উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলার ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঈদের দিন থেকে বিনোদনপ্রেমী হাজারো মানুষ ভিড় করছেন । </p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র, নদীর তীর ও খোলা জায়গায় ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। দর্শনার্থীরা বলছেন, ঈদ আনন্দ উপভোগে সোনারগাঁয়ে ছুটে এসেছেন। </p> <p>সোনারগাঁয়ের লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, পানাম নগরী, বাংলার তাজমহল, বারদী আশ্রম ও জ্যোতি বসুর বাড়িতে ঈদের দিন থেকে চোখে পড়ে উপচে পড়া ভিড়। লকডাউনের কারণে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় তারা আশপাশের খোলা জায়গায় গাদাগাদি করে বসে সময় পার করছে। এ সময় অনেকেই ব্যস্ত সেলফি নিয়ে। এ ছাড়া কাইকারটেক ব্রিজ, অলিপুরা রাবারডেম ব্রিজ, মেঘনা ব্রিজ, মেঘনা পাওয়ার প্লান্টের মাঠ, বৈদ্যের বাজার নদীর তীর ও নুনের টেকে ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছে।</p> <p>পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকলেও পর্যটনকেন্দ্রের সামনে, রাস্তায়, গাছতলায় এবং খোলা জায়গায় বিভিন্ন মালামাল, খাবার ও চটপটির দোকান এবং কারুপণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পানাম নগরী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের প্রধান ফটক ঘেঁষে বিভিন্ন ব্যবসায়ী পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। তবে তাদের কারো মুখে নেই মাস্ক। পানাম নগরীর কারুপণ্যের দোকানি মোশারফ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পানাম ও জাদুঘর বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা ব্যবসা করছেন।</p>