<p>মানিকগঞ্জের শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর তিন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন করে মাছের ঘের, রাস্তা-ঘাট পানির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে। এ তিন উপজেলার প্রায় সকল আঞ্চলিক পাকা সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রতিটি গ্রাম। এসব এলাকার বানভাসি মানুষ গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের সাতটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ সকল অঞ্চলের বন্যাদুর্গত বাসিন্দারা ঘরে মাচা করে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংঙ্কট।</p> <p>আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে জেলার আরিচা-যমুনা পয়েন্টে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।</p> <p>শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যার শুরুতেই এসব অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মাঠে থাকা আউশ ও আমন ধান বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে লোকজন। এ ছাড়া এসব এলাকার মানুষের অন্যতম আয়ের উৎসহ হলো কোরবানির পশু পালন। সারা বছর গরু লালন-পালন করে কোরবানির ঈদের আগে বিক্রয় করে থাকে। তবে এবার বন্যার কারণে কোরবানির পশুগুলোর লালন-পালনে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ইতিমধ্যে গরু বিক্রয় শুরু হলেও বন্যার কারণে ন্যায় দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।</p> <p>আলোকদিয়া চরের জলিল শেখ জানান, সারা বছর আমরা গরু পালন করে থাকি। তা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হাটে বিক্রয় করে সেই টাকা দিয়ে সারা বছর পরিবার-পরিজন নিয়ে চলি। এবার বন্যার কারণে পশুগুলোর সঠিক যত্ন নিতে পারি নাই। ব্যাপারীরা প্রতি গরুর ২০-২২ হাজার টাকা কম দাম করতেছে।</p> <p>আরো কয়েকজন কৃষক জানান, মাঠের সকল ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। স্বাভাবিক বন্যা হলেও কমপক্ষে আমন ধান হয়। এবার অস্বাভাবিক বন্যার কারণে সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে।</p> <p>এদিকে গত কয়েক দিন ধরে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।</p> <p>শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম রহুল আমিন রিমন জানান, আমরা চরাঞ্চলগুলোতে ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছি। এ ছাড়া সরেজমিনে গিয়ে বন্যা দুর্গতদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। প্রাথমিকভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম চলমান রাখা হবে।</p>