দায়িত্ব ও পদ-পদবি সম্পর্কে ইসলাম যা বলে

মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ
মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ
শেয়ার
দায়িত্ব ও পদ-পদবি সম্পর্কে ইসলাম যা বলে
ছবি : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি

তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্রশাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।

প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরের প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।

ইসলামের দৃষ্টিতে, ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১২৮)

৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের চিরন্তনতা।

ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ২৬)

ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।

প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)

তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্যাশা করে।’

আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)

ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাৎকারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)

ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান অর্ধ পৃথিবীর বাদশাহ। যাঁর সুশাসনের নজির হলো, জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’

ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য আল-হামরা প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাসধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।

দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। সালতানাত যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নূরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।

১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ঘোড়া বিক্রেতা ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে পাঁচ শ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।

ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ মানুষ। ক্ষমতায় মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায়, ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)

মহান আল্লাহ সবাইকে উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

লেখক : সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

ইসলামিক স্টাডিজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, কাপাসিয়া, গাজীপুর

prof.ershad92@gmail.com

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজানের পর রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
আজানের পর রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

আজান মুসলিম সমাজের দৈনন্দিন কর্মসূচির অন্যতম প্রতীক। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে আজান দেওয়া হয়। আজানের পর রাসুল (সা.) একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। তা হলো- 

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّداً الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامَاً مَحمُوداً الَّذِي وَعَدْتَهُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রববা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াস সালাতিল কাইমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াবআছহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়াআদতাহ।

অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব। মুহাম্মদ (সা.)-কে (জান্নাতে প্রবেশের) মাধ্যম এবং (সবার মধ্যে বিশেষ) সম্মান দান করুন। তাঁকে প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন। 

হাদিস : জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আজান শুনে উল্লিখিত দোয়া পড়বে কিয়ামতের দিন তার জন্য আমার সুপারিশ থাকবে।

(বুখারি, হাদিস : ৬১৪)

মন্তব্য

পাপকাজ থেকে যেভাবে বেঁচে থাকবেন

আহমাদ মুহাম্মাদ
আহমাদ মুহাম্মাদ
শেয়ার
পাপকাজ থেকে যেভাবে বেঁচে থাকবেন

পাপ থেকে বেঁচে থাকা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। তাই এই কষ্টসাধ্য বিষয়ের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশা নিয়ে চেষ্টা করলে সফলতা অনিবার্য। তবে এ জন্য কষ্ট করতে হবে এবং গুনাহ পরিত্যাগের ব্যাপারে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে আল্লাহর সাহায্যও মিলবে।

আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা আমাদের রাস্তায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, আমরা অবশ্যই তাদের আমাদের রাস্তাসমূহের দিকে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্কর্মশীলদের সঙ্গে থাকেন।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৬৯)

সুতরাং কুপ্রবৃত্তি যাতে গুনাহে লিপ্ত করাতে না পারে সে জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমরা ধৈর্য ধারণ করো ও ধৈর্যের প্রতিযোগিতা করো এবং সদা প্রস্তুত থাকো।

আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ২০০)

পাপ বর্জনে ধৈর্যের সঙ্গে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে তাই দান করেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৪৬৯)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এক যুবকের কাছে গেলেন।

তখন সে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। তিনি বলেন, তোমার কেমন অনুভূত হচ্ছে? যুবকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আল্লাহর শপথ! আল্লাহ তাআলার রহমতের আশা করছি, কিন্তু আবার ভয়ও পাচ্ছি আমার গুনাহগুলোর কারণে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে বান্দার হৃদয়ে এ রকম সময়ে এরূপ দুই জিনিস (ভয় ও আশা) একত্র হয়, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তার কাঙ্ক্ষিত জিনিস তাকে দান করেন এবং তাকে তার শঙ্কা থেকে নিরাপদ রাখেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৮৩)

প্রবৃত্তির অনুসারী না হওয়া

প্রবৃত্তির পূজারি হওয়ার কারণে মানুষ নানা পাপাচার ও নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সে জন্য মহান আল্লাহ বান্দাকে প্রবৃত্তির অনুসারী হতে নিষেধ করেছেন এবং প্রবৃত্তি পূজারিদের থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।

কেননা তাদের সঙ্গে থাকলে তাদের রীতিনীতির অনুসারী হয়ে পড়বে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই বহু লোক অজ্ঞতাবশত নিজেদের প্রবৃত্তি দ্বারা তাড়িত হয়ে লোকদের পথভ্রষ্ট করে। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সীমা লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে ভালোভাবেই অবগত।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১১৯)

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আর তাদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করবে না। আর তাদের ব্যাপারে সতর্ক থেকো, যেন তারা তোমাকে আল্লাহ প্রেরিত কোন বিধানের ব্যাপারে বিভ্রান্তিতে না ফেলে। কিন্তু তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রেখ যে আল্লাহ চান তাদেরকে তাদের কিছু কিছু পাপের দরুন (পার্থিব জীবনে) শাস্তি প্রদান করতে। বস্তুত লোকদের মধ্যে অনেকেই আছে পাপাচারী।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৯)

আল্লাহ প্রবৃত্তি পূজারিদের উদাহরণ পবিত্র কোরআনে এভাবে উল্লেখ করেছেন, ‘আর তুমি তাদের সেই ব্যক্তির কথা শুনিয়ে দাও, যাকে আমরা আমাদের অনেক নিদর্শন (নিয়ামত) প্রদান করেছিলাম। কিন্তু সে তা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। ফলে শয়তান তার পিছু নেয় এবং সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। যদি আমরা চাইতাম তাহলে উক্ত নিদর্শনাবলি অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে অবশ্যই তার মর্যাদা আরো উন্নত করতে পারতাম। কিন্তু সে মাটি আঁকড়ে রইল এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসারী হলো। তার দৃষ্টান্ত হলো কুকুরের মতো। যদি তুমি তাকে তাড়িয়ে দাও তবু হাঁপাবে, আর যদি ছেড়ে দাও তবু হাঁপাবে। এটি হলো সেসব লোকের উদাহরণ, যারা আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে। অতএব, তুমি এদের কাহিনি বর্ণনা করো, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৭৫-৭৬)

অন্যদিকে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) প্রবৃত্তি পূজাকে ধ্বংসকারী আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আর ধ্বংসকারী তিনটি বস্তু হলো—(১) প্রবৃত্তি পূজারি হওয়া, (২) লোভের দাস হওয়া এবং (৩) অহংকারী হওয়া। আর এটিই হলো সবচেয়ে মারাত্মক।’ (বায়হাকি শোআব, হাদিস : ৬৮৬৫)


 

মন্তব্য

অন্যায় কাজে আল্লাহর নাম নেওয়া যাবে?

মাইমুনা আক্তার
মাইমুনা আক্তার
শেয়ার
অন্যায় কাজে আল্লাহর নাম নেওয়া যাবে?

কাজের শুরুতে আল্লাহর নাম নেওয়া তথা বিসমিল্লাহ বলা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। প্রিয় নবীজি (সা.) যেকোনো ভালো কাজ বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করতেন। ‌বিসমিল্লাহ ইসলামের অন্যতম প্রতীক বা নিদর্শন। একে সম্মান করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনে ইসলামের প্রতীক বহন করে এমন বিষয়গুলোকে সম্মান করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মুমিনের তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ হয়।  ইরশাদ হয়েছে, ‘এটাই আল্লাহর বিধান এবং কেহ (আল্লাহর) নিদর্শনাবলিকে সম্মান করলে এটা তো তার হৃদয়ের তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩২)

তাই ইসলামের এই প্রতীক বহনকারী এসব নিদর্শনের ব্যাপারে এমন উক্তি করা উচিত নয়, যার মা‌ধ্যমে তার সম্মান নষ্ট হয়।

যেমন—কোনো হারাম কাজ করার সময় ঠাট্টা করে আল্লাহর নাম নেওয়া বা কাউকে বিসমিল্লাহ বলে হারাম কাজ করতে বলা ইসলামের প্রতীক বহনকারী বিসমিল্লাহর সঙ্গে ঠাট্টা করার শামিল, কোনো মুমিন জেনে-শুনে এ ধরনের কাজ কখনোই করতে পারে না।

সব কাজে আল্লাহর নাম নেওয়া বা আল্লাহকে স্মরণ করা অবশ্যই ভালো কাজ, তবে তা হতে হবে পরিপূর্ণ বিনয় ও ভীতির সঙ্গে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালককে মনে মনে বিনয়ের সঙ্গে ভয়ভীতি সহকারে অনুচ্চস্বরে সকাল-সন্ধ্যায় স্মরণ করো আর উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ো না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২০৫)

কিন্তু আল্লাহর নাফরমানির কাজে বিসমিল্লাহ বলা তো বিনয় ও ভীতি প্রদর্শন করে না, বরং আল্লাহর সঙ্গে অনেকটা বিদ্রোহের চিহ্ন বহন করে, যা খুবই ভয়ংকর বিষয়।

প্রত্যেক মুমিনের উচিত এ ধরনের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা। অসতর্কতাবশত এমন কাজ হয়ে গেলে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
 

মন্তব্য

আজকের নামাজের সময়সূচি, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

আজ বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬। 

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ-

জোহরের সময় শুরু - ১১:৫৬ মিনিট।
আসরের সময় শুরু - ৩:৩৭ মিনিট।
মাগরিব- ৫:১৬ মিনিট।


এশার সময় শুরু - ৬:৩৫ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৫টা ১৬ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১২ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩২ মিনিটে। 

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ