<p>সামাজিক জীবনে ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভে আল্লাহ ও মানুষের ভালোবাসা পাওয়া অপরিহার্য। আর আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করলে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া খুবই সহজ। ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করলে এবং আল্লাহভীতি অবলম্বন করে চললে আল্লাহ অবশ্যই আল্লাহভীরুদের ভালোবাসেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৭৬)</p> <p>ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক পারস্পরিক শত্রুতা, হিংসা ও বিদ্বেষ থেকে বাঁচতে সহায়তা করে। আর এমন হৃদ্যতার সম্পর্ক লাভ করা পার্থিব জীবনের অনেক বড় সাফল্য। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে ও ভালো কাজ করে পরম করুণাময় তাদের জন্য ভালোবাসা তৈরি করবেন।’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ৯৬)</p> <p><strong>আল্লাহর ভালোবাসা লাভের উপায়</strong></p> <p>আল্লাহ ও মানুষের ভালোবাসা অর্জনে মহানবী (সা.) দুটি আমলের কথা বর্ণনা করেছেন। আবুল আব্বাস সাহাল সাআদ আল-সায়িদি (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর কাছে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে এমন একটি আমল বলুন, আমি যখন তা করব আমাকে আল্লাহ ও মানুষ ভালোবাসবে। তখন তিনি বলেছেন, ‘তুমি দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত হও, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। মানুষের কাছে যা আছে তার প্রতি অনাসক্ত হও, মানুষ তোমাকে ভালোবাসবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১০২)</p> <p><strong>দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন</strong></p> <p>দুনিয়ায় মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। পার্থিব জগতের চাকচিক্য ও উন্নতি সবই অন্তঃসারশূন্য। একসময় সব কিছু ধূলিসাৎ হয়ে পড়বে। আর মানুষকে নিজের ঈমান ও আমল নিয়েই সৃষ্টিকর্তার সামনে উপস্থিত হতে হবে। পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা জেনে রাখো, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক অহমিকা, ধন-সম্পদের প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছুই না, এর উপমা বৃষ্টির মতো, যা দিয়ে উৎপন্ন শস্যসম্ভার কৃষকদের চমৎকৃত করে, অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তা হলদে বর্ণের দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটায় পরিণত হয়, পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি, পার্থিব জীবন প্রতারণার সামগ্রী ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ২০)</p> <p><strong>প্রিয় ও ঘৃণার পাত্র হওয়ার কারণ</strong></p> <p>সব সময় আল্লাহর নির্দেশনা পালনের মাধ্যমে তাঁর ভালোবাসা অর্জনের চেষ্টা করা উচিত। হাদিসে আল্লাহর কাছে প্রিয় ও ঘৃণিত হওয়ার মাধ্যমে দুনিয়াবাসীর কাছে প্রিয় ও ঘৃণিত হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ কাউকে ভালোবাসলে জিবরাইল (আ.)-কে ডেকে বলেন, আমি তাকে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাসো। জিবরাইল (আ.) তাকে ভালোবাসতে শুরু করেন। অতঃপর তিনি আসমানে ঘোষণা দিয়ে বলেন, আল্লাহ অমুককে ভালোবাসেন, তোমরা সবাই তাকে ভালোবাসো। অতঃপর পুরো আসমানবাসী তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। এরপর ভূপৃষ্ঠেও তার গ্রহণযোগ্যতার ব্যবস্থা করা হয়। অপরদিকে আল্লাহ কাউকে ঘৃণা করলে তিনি জিবরাইল (আ.)-কে ডেকে বলেন, আমি অমুককে ঘৃণা করি তুমি তাকে ঘৃণা কোরো। জিবরাইল (আ.) তাকে ঘৃণা করতে শুরু করেন। অতঃপর তিনি আসমানে ঘোষণা দিয়ে বলেন, আল্লাহ অমুককে ঘৃণা করেন, তোমরা সবাই তাকে ঘৃণা কোরো। অতঃপর পুরো আসমানবাসী তাকে ঘৃণা করতে শুরু করে। এরপর ভূপৃষ্ঠেও তার প্রতি ঘৃণাবোধ তৈরি করা হয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৩৭)<br />  </p>