<p>মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য সব সময় সৌভাগ্যের ও প্রার্থিত। মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ ছাড়া তাঁর সান্নিধ্যের সৌরভ লাভ করা সম্ভব নয়। পার্থিব জীবনে মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভ করা এখন আর সম্ভব নয়, তবে মুমিন চাইলে পরকালে তাঁর সঙ্গী হতে পারে। আর তা সম্ভব হবে নির্ধারিত কিছু আমলের মাধ্যমে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো—</p> <p><strong>যারা নবীজি (সা.)-এর সঙ্গী হবে</strong></p> <p><strong>১. যারা নবীজিকে ভালোবাসবে :</strong> যারা পার্থিব জীবনে মহানবী (সা.)-কে ভালোবাসবে তারাই জান্নাতে তাঁর সঙ্গী হবে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, কিয়ামত কখন হবে? তিনি বললেন, তুমি কিয়ামতের জন্য কী জোগাড় করেছ? সে বলল, কোনো কিছু জোগাড় করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসি। তিনি বলেন, তুমি তাঁদের সঙ্গেই থাকবে যাঁদের তুমি ভালোবাস। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৮৮)</p> <p><strong>২. বেশি পরিমাণ নামাজ আদায়কারী :</strong> যারা বেশি পরিমাণে নামাজ আদায় করবে এবং সিজদা করবে পরকালে তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী হবে। রাবিআ বিন কাব আসলামি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে তার অজুর পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার কাছে কিছু চাও। আমি বললাম, আমি বেহেশতে আপনার সঙ্গ কামনা করি। তিনি বললেন, এ ছাড়া অন্য কিছু কি চাও? আমি বললাম, না, এটাই। তিনি বলেন, তা হলে তুমি বেশি সিজদা দ্বারা তোমার এ কাজে আমাকে সাহায্য কোরো। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১১৩৮) </p> <p><strong>৩. যারা রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করবে :</strong> যারা মহানবী (সা.)-এর আনুগত্য করবে, তারা পরকালে তাঁর সঙ্গী হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, তারা তাদের সঙ্গে থাকবে, যাদের আল্লাহ নিয়ামত দান করেছেন।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৬৯)</p> <p><strong>৪. উত্তম চরিত্রের অধিকারী :</strong> জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির চরিত্র ও আচরণ সর্বোত্তম সে আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় এবং সে কিয়ামতের দিনও আমার খুবই কাছে থাকবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০১৮)</p> <p><strong>৫. এতিম প্রতিপালনকারী :</strong> যারা এতিম শিশুর দায়িত্ব নেয় এবং প্রতিপালন করে, আল্লাহ তাদের পরকালে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্যে ধন্য করবেন। সাহাল বিন সাআদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি ও এতিমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব। এটা বলে তিনি তাঁর শাহাদাত ও মধ্যমা আঙুল দ্বারা ইঙ্গিত করেন এবং উভয় আঙুলের মধ্যে সামান্য ফাঁক রাখলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩০৪)</p> <p><strong>৬. কন্যাশিশুর প্রতিপালনকারী : </strong>আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তির দুজন বোন বা কন্যা থাকে এবং সে তাদের প্রতি উত্তম আচরণ করে, আমি ও সে জান্নাতে এভাবে থাকব (তিনি তাঁর দুই আঙুল মিলিয়ে দেন)। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১২৫৯৩)</p> <p><strong>৭. বেশি বেশি দরুদ পাঠকারী : </strong>আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আমার নিকটমত ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করেছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪৮৪)</p> <p>মহান আল্লাহ আমাদের জান্নাতে নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গী হওয়ার তাওফিক দান করুন।</p>