<p style="text-align:justify">বিচারকদের দুর্নীতি নিয়ে লিখতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেছেন, ‘আপনারা বিচারকদের দুর্নীতি নিয়ে লিখুন। তবে সেই লেখা সত্য হতে হবে। লেখা মিথ্যা হলে বিচারকের পারিবারিক ও সামাজিক জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।’</p> <p style="text-align:justify">শনিবার (৩ আগস্ট) এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও আইন সাংবাদিকতা নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের হলরুমে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।    </p> <p style="text-align:justify">বিচারকদের দুর্নীতি নিয়ে বলতে গিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, ‘আমাদের (বিচারকদের) স্পষ্ট আচরণবিধি আছে। কিন্তু এর কোনো প্রয়োগ নাই। সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. লতিফুর রহমান আচরণ বিধিমালা করেছিলেন। কোথাও যেতে বা তদবির করতে পারব কি পারব না। এগুলো অনেকেই মানেন। আর একটা অংশই আছে যারা মানেন না। তারা হরদম তদবিরবাজিতে থাকেন, হরদম ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদবিরবাজি করেন। সংবিধান ও আইন আমার (বিচারক বা বিচারপতির) ওপর একটা ক্ষমতা অর্পণ করেছে। আমি সেই ক্ষমতাকে অপব্যবহার করছি আমার বেনিফিটের (সুবিধা) জন্য। আমার আত্মীয়-স্বজনদের সুবিধার জন্য, এটাও দুর্নীতি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুর বিনিময়ে কোনো মামলায় সুবিধা পাইয়ে দেওয়াটাও বড় ধরনের দুর্নীতি। এ ধরনের দুর্নীতি অপ্রকাশিত থেকে যায়।’ </p> <p style="text-align:justify">সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ প্রসঙ্গে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, ‘বিচারপতি অপসারণসংক্রান্ত ষোড়শ সংশোধনী মামলা রিভিউ (পুনর্বিবেচনার আবেদন) হওয়ায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল নিয়ে একটা জগাখিচুড়ি অবস্থায় আছি আমরা। মামলাটা সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ের পর একটি কোড অব কনডাক্ট (আচরণ বিধিমালা) জাজদের দেওয়া হয়েছিল। এই আচরণ বিধিমালাটা আছে কিনা আমি কনফিউজড! এই মামলাটি বিচারাধীন থাকায় বিচারকদের জবাবদিহিও ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। একজন বিচারককে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়টি, সেটা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল হোক বা সংসদের মাধ্যমে হোক, তা আট বছর ধরে ঝুলছে। ফলে একজন বিচারক যদি দুর্নীতির অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হন, তবে তার বিরুদ্ধে কোন পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এমন কোনো পদ্ধতি এখন আছে কি?’ দুর্নীতির সহজ সংজ্ঞা নির্ধারণ সংশ্লিষ্ট আইনে সংশোধন আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিচারপতি। </p> <p style="text-align:justify">কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন এলআরএফ সভাপতি মাসউদুর রহমান রানা। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি মাজহারুল হক মান্না। পরে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন প্রধান অতিথি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।</p>