<p>বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার। ব্যবসা করাই যাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা ব্যবসার পাশাপাশি এমন কিছু কাজকে প্রাধান্য দিয়েছে, যা দেখে আমার মতো অনেকেই অভিভূত। দেশের অন্য সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানও ব্যবসা করে মুনাফা করছে ঠিকই, অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য কিছু করছে না। বিপদের দিনে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। এখানেই অন্যদের সঙ্গে পার্থক্য বসুন্ধরা গ্রুপের। সাধারণ মানুষের জন্য কল্যাণমুখী নানা উদ্যোগ নিয়ে একটি মানবিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এসব কারণেই আমাদের অভিভূত হওয়া।<br /> অতি সম্প্রতি একটি ঘটনা এমনভাবে আমাকে নাড়া দিয়েছে যে তা প্রকাশ না করলেই নয়। আমার এলাকার দরিদ্র্য পরিবারের একটি মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। জোনাকী নামের সেই মেয়ে কাঁধে তুলে নিয়েছে পরিবারের দায়িত্ব। কারণ তার বাবা কিছুদিন আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মা নিজেও এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। বিষয়টি জানার পর আমি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ওই পরিবারকে সহায়তাও দিয়েছি। বিষয়টি বসুন্ধরা গ্রুপের নজরে আসে। এই শিল্প পরিবারের আওতাভুক্ত ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন নিজে ছুটে আসেন জোনাকীর বাড়িতে। আমার উপস্থিতিতে তার পরিবারের ঋণের সমুদয় অর্থ পরিশোধ এবং তিন মাসের খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন। জোনাকীর লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার জন্য এবং পরিবারের চলার জন্য প্রতি মাসে পাঁচ হাজার করে টাকা প্রদান করবেন ঘোষণা দিয়ে ডিসেম্বর মাসের টাকাও দিয়েছেন। এমন কাজ কেন করল একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ? কারণ তাদের মধ্যে শুধুই মুনাফা করার অভিলাষ নেই, আছে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার প্রত্যয়। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার সদিচ্ছা।<br /> আগেও বসুন্ধরা গ্রুপ পরিচালিত বসুন্ধরা শুভসংঘের নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার সুযোগ আমার হয়েছিল। করোনা মহামারির সময়ে আমার এলাকায় তারা মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে একটি মহৎ কাজ সম্পন্ন করেছিল। সোনাতলা ও সারিয়াকান্দির ৭০০ পরিবারকে সে সময় এক মাসের খাদ্য সহায়তা দিয়েছিল বসুন্ধরা গ্রুপ। পুরো উত্তরবঙ্গে ৫০ হাজার মানুষ বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এক মাসের খাদ্য সহায়তা পেয়েছিল। আমার পার্শ্ববর্তী উপজেলা সারিয়াকান্দিতে বসুন্ধরা শুভসংঘ একটি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছে। সেখানে নদীভাঙন কবলিত অসহায় পরিবারের নারীরা সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন পেয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছেন তাঁরা। বিভিন্ন এলাকায় অসচ্ছল পরিবারের সন্তানদের জন্য স্কুল নির্মাণ ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করছে বসুন্ধরা গ্রুপ।<br /> ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ’ সত্যিকার অর্থে সব শুভ কাজ করছে। তাদের মাধ্যমে শীতার্ত মানুষ কম্বল পাচ্ছে, গৃহহীনরা ঘর পাচ্ছে। এভাবেই মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। আমি নিজেও নদীভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা। আমার চাওয়া, বসুন্ধরা গ্রুপ বগুড়া অঞ্চলের বেকার সমস্যা সমাধানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে। সোনাতলা উপজেলা প্রশাসন তথা সোনাতলাবাসীর পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।</p>