<p>রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার ফরাশগঞ্জ রোডের ৫৯ নম্বরে অবস্থিত হিন্দু অনাথ আশ্রম। এখানে সনাতন ধর্মের পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সের প্রায় এক শ অনাথ শিশু রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কোনো রকমে জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।</p> <p>সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রমের আশপাশ ও প্রবেশপথ ময়লা-আবর্জনায় ভরা। ভবনের ভেতর ও বাইরের অবস্থাও জরাজীর্ণ। আশ্রমের আশপাশে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো বর্জ্য ফেলেন। আশ্রমের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বড় একটি গাছ। গাছের নিচে ইট-পাথরের স্তূপ। ভেতরে গিয়ে কয়েকটি শিশুকে দৌড়াদোড়ি করতে দেখা যায়। কোথাও আবার কয়েকটি শিশু মিলে আড্ডা দিচ্ছিল।</p> <p>জানা যায়, জরাজীর্ণ ভবনটি ১৯৫০ সাল থেকে ‘হিন্দু অনাথ আশ্রম’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আশ্রমে আশ্রিত ছেলে-মেয়েদের সব মৌলিক চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করে আশ্রম কর্তৃপক্ষ। তাদের তিন বেলা ভাত দেওয়া হয়। সকালে ও রাতে থাকে নিরামিষ। প্রতি শুক্রবার মাংস, সোমবারে ডিম এবং বাকি দিনগুলোতে থাকে মাছ। যেকোনো উৎসবে তাদের দেওয়া হয় নতুন পোশাক। স্কুলের পোশাকও পায় তারা। তাদের দেখভালের দায়িত্বে আছেন ১২ থেকে ১৪ জন। মোট কক্ষ ২৩টি। ছোট কক্ষে ছয়-সাতজন এবং বড় কক্ষে ১০-১২ জন থাকে।</p> <p>আশ্রমের তত্ত্বাবধায়ক কালী পদ সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সরকার থেকে পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ পাই। এই অর্থ দিয়ে আমাদের সব কাজ ঠিকঠাক করা সম্ভব হয় না। আমাদের কিছু দাতা আছেন; তাঁরাও কিছু অর্থ দেন। তবে আরো অর্থ সহযোগিতা পেলে এখানকার শিশুরা হয়তো আরো একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারত।’</p> <p>চাঁদপুরের দিগন্তর মা-বাবা নেই। ২০১১ সাল থেকে সে আছে এই অনাথ আশ্রমে। তার ভাষ্য, এখানকার সব কিছুই ভালো। থাকা-খাওয়ার সমস্যা নেই।</p> <p>মেয়েকে দেখতে আসা অভিভাবক অনিতা বলেন, ‘পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে ছোট অবস্থায় আমার মেয়েকে এখানে রেখে যাই। এখানে অনেক ভালো আছে। এ ছাড়া আমি প্রতিনিয়ত মেয়েকে দেখতে আসি।’</p>