<p>বাতাসের বিষ, অর্থাৎ কার্বন ডাই-অক্সাইড ঝাড়ানোর ‘ওঝা’ কি তবে এসে গেল? বিজ্ঞানবিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘প্রসিডিংস অব ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’-এর সর্বশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, নতুন ওই ‘ওঝা’ হলো নিকেল ও লোহা দিয়ে বানানো একটি অনুঘটক বা ক্যাটালিস্ট। এই অনুঘটকই বাতাসের বিষ কার্বন-ডাই অক্সাইড অণুকে ভেঙে দিতে পারে।</p> <p>প্রতি মুহূর্তে আমাদের শ্বাসে বাতাস ভরে উঠছে বিষে। সেই বিষের পরিমাণ দিনকে দিন এতই বেড়ে চলেছে যে বাতাসে শ্বাসের অক্সিজেনের ঘাটতি আমাদের কপালের ভাঁজ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিপদ একা আসে না। সঙ্গী নিয়ে আসে। বাতাসের বিষও তেমনি ডেকে আনছে আরো একটা বিপদ। গায়ের জ্বর বাড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর। তাতে খুব তেতে উঠছে আমাদের গ্রহ। দুই মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে দ্রুত; অস্বাভাবিক হারে। ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের স্তর হুড়মুড়িয়ে ওপরে উঠে আসছে। তাই জরুরি হয়ে পড়েছে বাতাসের বিষ ঝেড়ে ফেলার কাজ। কিন্তু সে তো সাপের বিষ নয়, যে ঝেড়ে ফেলাটা খুব সহজ হবে। কারণ বাতাসের সেই বিষ তো বায়ুমণ্ডলের অন্যতম একটি উপাদানও; যার নাম কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস। তাই বিষ ঝেড়ে তাকে বায়ুমণ্ডল থেকে বের করে এনে তার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হলে সেই বিষকেই অন্য কিছুতে বদলে দিতে হবে। আর তা যদি এমন কিছুতে বদলে ফেলা যায়, যা আমাদের রোজকার জীবনে খুবই কাজে লাগে, তাহলে তার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? কিন্তু বদলাতে গেলে তো ভাঙতে হবে কার্বন ডাই-অক্সাইড অণুকে।</p> <p>এই কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের একটি অণু তৈরি হয় একটি কার্বন পরমাণু আর দুটি অক্সিজেন পরমাণু দিয়ে। আর সেই কার্বন পরমাণুর সঙ্গে অক্সিজেন পরমাণু দুটির বন্ধন এতই শক্তিশালী যে কার্বন ডাই-অক্সাইড অণুকে ভাঙার কাজটা মোটেই সহজ নয়। যে প্লাটিনাম অনুঘটক দিয়ে এখন কার্বন ডাই-অক্সাইড অণু ভাঙার কাজটা চালানো হচ্ছে, সেই প্লাটিনাম খুব দামি। চট করে পাওয়াও যায় না। নতুন গবেষণার কৃতিত্ব হলো, এবার সেটা করা যাবে খুব সহজে। আরো দ্রুত। অনেক কম খরচে। শুধু তাই নয়, যে ব্যাটারির মাধ্যমে সেটা করা হবে তার আয়ুও হবে অনেক বেশি। কারণ নতুন অনুঘটক বানানো হয়েছে নিকেল আর লোহার অক্সাইড কার্বোনেটের একটি যৌগ দিয়ে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।</p> <p> </p>