<p>ভারতে লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে বিজেপিবিরোধী এক জোট গড়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো গত বুধবার রাতে মহারাষ্ট্রের প্রবীণ নেতা শারদ পাওয়ারের বাড়িতে। সেখানে এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলেগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রমুখ।</p> <p>পরে ওই নেতারা সাংবাদিকদের জানান, ভোটের আগে জোটবদ্ধ হবেন তাঁরা। তৈরি হবে কমন মিনিমাম প্রগ্রাম বা অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি।</p> <p>বৈঠক শেষে রাত ১০টার দিকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সংশ্লিষ্ট নেতারা। সেখানে জানানো হয়, অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচিতে কী থাকবে, কী হবে জোটের নাম, তার খসড়া ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। জোটে থাকতে আগ্রহী নেতারা রাহুলের কাছে তাঁদের প্রস্তাব পাঠাবেন। ১৫ দিন পর আবার বসবে বৈঠক। তখন সব কিছু চূড়ান্ত হবে।</p> <p>লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদের শেষ অধিবেশনের শেষ দিন ছিল গত বুধবার। বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীরা সেদিন দিল্লিতে ছিলেন। জানা যায়, ওই দিন যন্তরমন্তরে আম আদমি পার্টির ধরনা মঞ্চেই শারদ পাওয়ার তাঁর বাড়িতে চায়ের আমন্ত্রণ জানান অন্যান্য দলের নেতাদের। সে অনুযায়ী সমাবেশ সেরে বুধবার সন্ধ্যায় শারদ পাওয়ারের বাড়ি যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রবাবু নাইডু, ফারুক আবদুল্লা, অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রমুখ। কিছু সময় পর চন্দ্রবাবু, কেজরিওয়াল ও ফারুক আবদুল্লা চলে যান। থাকেন শারদ পাওয়ার, প্রফুল্ল প্যাটেল ও মমতা। ওই সময় আচমকাই জানা যায়, কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী যাচ্ছেন শারদ পাওয়ারের বাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে পাওয়ার অনুরোধ করেন চন্দ্রবাবু, ফারুক ও কেজরিওয়ালদের আরো একবারের জন্য তাঁর বাড়ি যেতে। নতুনভাবে শুরু হয় বৈঠক রাহুলকে নিয়ে।</p> <p>মমতা গতকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকার করেন। এরপর যান প্রেস ক্লাবে। সেখানে তিনি কংগ্রেস ও সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গে জোট বাঁধার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘যেসব রাজ্যে আমাদের সংগঠন নেই, যেমন—মধ্য প্রদেশ, সেখানে আমরা কোনো প্রার্থী দিচ্ছি না। এটা কংগ্রেসকে বুঝতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের কোনো সংগঠন নেই, তাহলে কেন দিল্লি সেটা রাজ্য নেতাদের বোঝাতে পারছে না?’</p> <p>এবার দিল্লি সফরে কংগ্রেসকে নিয়ে মমতার একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। গত বুধবার যখন তিনি সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে বসেছিলেন তখন লোকসভায় চিট ফান্ড বিল নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতারা চিট ফান্ড নিয়ে মমতার সমালোচনা করেন। এতে মমতা খুব রেগে যান এবং পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতাদের বিষয়ে সোনিয়া গান্ধীর কাছে নালিশ জানান। পরে শারদ পাওয়ারের বাড়িতে বিরোধীদের বৈঠক হয় এবং সেখানে রাহুল ও মমতা দুজনই ছিলেন। সেখানে ঠিক হয়, রাজ্যস্তরে ঝগড়া থাকলেও জাতীয় স্তরে মোদিবিরোধী ফ্রন্ট গঠনে তাঁরা একত্র হবেন।</p> <p> </p>