ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

১৬ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানাল বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
১৬ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানাল বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউস প্রাঙ্গণে সম্মাননাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অতিথিরা। ছবি : কালের কণ্ঠ

১৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে আজীবন সম্মাননা জানাল দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউস প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের বীর সন্তানদের এই সম্মাননা জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেই বাংলাদেশ প্রতিদিন ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পথচলা। আর বাংলাদেশ সৃষ্টিতে মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান তা মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই প্রয়াস।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ও উত্তরীয় পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বসুন্ধরা গ্রুপ ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়ার চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক ও নিউজ২৪-এর সিইও নঈম নিজাম।

সম্মাননাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন—এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীর-উত্তম, মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বীর-উত্তম, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর-উত্তম, লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী বীর-উত্তম, কমডোর (অব.) এ ডাব্লিউ চৌধুরী বীরবিক্রম, কর্নেল (অব.) এ এইচ এম গাফফার, বীর-উত্তম, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর-উত্তম, গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) শামসুল আলম বীর-উত্তম, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) লিয়াকত আলী খান বীর-উত্তম, মেজর (অব.) কামরুল হাসান ভূঁইয়া, মেজর (অব.) আকতারুজ্জামান, কমান্ডার (অব.) খলিলুর রহমান, ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, কামাল লোহানী, স্থপতি মোবাশ্বির হোসেন ও মামুনুর রশীদ।

এই আয়োজনে পৃষ্ঠপোষতা করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) এবং মিডিয়া পার্টনার নিউজ২৪। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিউজ২৪-এর হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সামিয়া রহমান।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন এবং এসআইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাজী ওসমান আলী।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানোর এই সুন্দর আয়োজনটি করার জন্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এর আগে কোনো মিডিয়া একসঙ্গে এতজন গুণী ও শ্রদ্ধেয় মানুষকে একত্র করেনি। বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা এক ও একক অর্থে ব্যবহার করা যায়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সত্যিকার অর্থেই একটি জনযুদ্ধ। সে সময় কিছু দেশদ্রোহী ছাড়া দেশের প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষেরই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউসের যখন যাত্রা শুরু হয় তখন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। আহমেদ আকবর সোবহান প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে মানুষের পক্ষে কাজ করব।
আজ তাঁর সেই কথারই প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। দেখে ভালো লাগছে এই মিডিয়া সত্যিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে চলছে।’

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিতে পেরে আমরা গর্বিত। আমরা এমন কিছু লোককে সম্মাননা দিতে যাচ্ছি যাদের কৃতীত্বের কথা জানিয়ে শেষ করা যাবে না। পৃথিবীর বুকে যত দিন বাংলাদেশের নাম থাকবে তত দিন

মুক্তিযোদ্ধাদের নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাংলাদেশের মানুষ  মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজকের এই বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা এখন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।’

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘একসময় বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে বলত তলাবিহীন ঝুড়ি, আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতি সারা দুনিয়ার কাছে ঈর্ষণীয়। আমরা গর্বিত যে আজকে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে বসবাস করি। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। একই সঙ্গে এই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্ম না হলেও বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। আমরা তাদের সম্মান জানিয়ে নিজেরাই গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেই আমাদের ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া পথ চলছে। এই মুক্তিযোদ্ধারা একেকজন একেকটি ইতিহাস। তাঁরা দেশের জন্য যা করেছেন তা মহাগ্রন্থ হিসেবে থাকবে। আমরা আশা করি, আপনারা দেশের জন্য আরো অবদান রাখবেন।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সৃষ্টিতে মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান তা মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য আমাদের এই প্রয়াস। বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। আমাদের এই দৈনিকটি প্রতিদিন সাড়ে পাঁচ লাখ কপি ছাপা হয়। হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে আমরা এই কাগজটি প্রকাশ করি।’ তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালের আদর্শকে ধারণ করেই ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিন যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছতে পারে সে প্রয়াস আমাদের। এই মিডিয়ার প্রতিটি কাগজই যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হয় সে ব্যাপারে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানও আমাদের বলেন। ব্যক্তিগতভাবে আমিও মুক্তিযুদ্ধ পরিবারেরই সন্তান।’

কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘১৯৭১ সালের মতো সুসময় আর দুঃসময় কখনো আমাদের আসেনি। সুসময় এ জন্য যে কিছু রাজাকার ছাড়া প্রতিটি মানুষ সে সময় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। আর দুঃসময় এ জন্য যে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ৩০ লাখ লোককে প্রাণ দিতে হয়েছে। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়ার প্রতিটি কাগজ, টেলিভিশন, রেডিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেই এগিয়ে চলছে। আমাদের মাথার ওপর যিনি আছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, তিনিও সে কথাটিই আমাদের বলেন। আর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিতে পেরে আমরা নিজেরাই সম্মানিত হয়েছি।’

এসআইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাজী ওসমান আলী বলেন, ‘এসআইবিএল দেশের অন্যতম বৃহৎ শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক। আমরা চেষ্টা করি মানুষকে সেবা দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান এগিয়ে নিতে। মুক্তিযুদ্ধের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমরা নিজেরাই গর্ববোধ করছি। আমাগীতেও এ ধরনের অনুষ্ঠানে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শেয়ার
তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।

কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।

গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মন্তব্য
ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।

আজ সেই চেতনাকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন। তিনি আরো বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিলেন, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগ্নি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমানবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিতআমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে মবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদারসবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

মন্তব্য

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।

গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।

শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে সন্দেহজনক হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ