<p>ভোলার দৌলতখানে এক নারীকে গলা কেটে এবং মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।</p> <p>গত শুক্রবার গভীর রাতে দৌলতখান উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। </p> <p>পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।</p> <p>নিহত দুজন হলো শাহনাজ বেগম (৩০) ও তাঁর মেয়ে মোহনা (১)।</p> <p>নিহতদের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম জয়নগর গ্রামের গাড়ির চালক বিল্লাল এর আগে একটি বিয়ে করেছিল। সম্প্রতি এ খবর তার বর্তমান স্ত্রী শাহনাজ বেগম জানতে পারেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ঝগড়া-বিবাদ হয়। এর জের ধরে একপর্যায়ে বিল্লাল শুক্রবার রাত প্রায় ২টার দিকে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে এ হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টায় ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে ঝলসে যায় এক বছরের মেয়ে মোহনার শরীর ও মুখমণ্ডল। আগুন লাগাতে গিয়ে বিল্লালও আহত হয়।</p> <p>স্থানীয় লোকজন গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শিশু মোহনাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোহনাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেওয়ার সময় গতকাল শনিবার সকালে শিশুটির মৃত্যু হয়। আহত বিল্লালকে ভোলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর গ্রেপ্তার করে দৌলতখান থানার হেফাজতে নেওয়া হয়।</p> <p>বিল্লালের ছেলে মেহেদী হাসানকে (৭) নিয়ে তার দাদি আমেনা বেগম গাঢাকা দিয়েছেন। স্বজনরা দাদি-নাতিকে খুঁজে পাচ্ছে না।</p> <p>নিহত শাহনাজের ভাই আলাউদ্দিন বলেন, তাঁদের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার নবীপুর বাঁশতলা এলাকায়। ১৪ বছর আগে দৌলতখানের পশ্চিম জয়নগর গ্রামের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে তাঁর বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে আসছিল বিল্লাল। যৌতুক না দেওয়ার সে তাঁর বোনের ওপর নির্যাতন চালাত।</p> <p>আলাউদ্দিন আরো বলেন, ‘বিল্লাল আরেকটি বিয়ে করেছে—এ খবর আগে কেউ জানত না। সম্প্রতি এ খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সে আমার বোন ও ভাগ্নিকে মেরে ফেলেছে।’</p> <p>দৌলতখান থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, বিল্লালই তার স্ত্রী শাহনাজ বেগম ও মেয়ে মোহনাকে হত্যা করেছে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে সে।</p> <p>ওসি বলেন, শাহনাজ ও মোহনার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল দুপুরে ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দৌলতখান থানায় হত্যা মামলা করেছেন শাহনাজের ভাই আলাউদ্দিন।</p> <p>দুপুরে ভোলার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল স্বীকার করেছে যে পারিবারিক কলহের জেরে সে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে তার শিশুকন্যা মোহনাও পুড়ে মারা যায়।</p>