কক্সবাজারের মাতারবাড়ী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা মাটি মেশানো কয়লার চালান যেকোনো মূল্যে গছিয়ে দিতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপের পক্ষ থেকে তদবির করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেঘনা গ্রুপের এ ধরনের কর্মকাণ্ড নতুন কিছু নয়। এর আগেও মেঘনা গ্রুপের লাখ কোটি টাকা পাচার তদন্তে নেমেছিল এনবিআর। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বন্দরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
মাটি মেশানো কয়লার চালান গছাতে তদবির!
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার

এদিকে দ্বিতীয় জাহাজের কয়লাও আটকা পড়ার আশঙ্কায় দ্রুত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় জেটিতে আনলোড করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫৭ হাজার টন মাটি মেশানো কয়লা আনলোড করা হয়েছে। লিমনিওনাস নাশাও নামের দ্বিতীয় জাহাজটিতে ৭০ হাজার টন কয়লা রয়েছে।
মাটি মেশানো কয়লার চালান নিয়ে শুরু থেকেই প্রতিবাদ করে আসছেন বন্দরে পণ্য লোড-আনলোডিংয়ে নিয়োজিত শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দরের একজন শ্রমিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পর পর দুটি জাহাজের কয়লার চালানই অত্যন্ত নিম্নমানের। এত নিম্নমানের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র কিভাবে গ্রহণ করছে বুঝতে পারছি না।’
শ্রমিকরা বলেন, ‘এই দেশ আমাদের, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও আমাদের। এটির মালিক দেশের ১৮ কোটি মানুষ। এই কেন্দ্রটি নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই কেন্দ্রটিও বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে।’
শ্রমিকরা জানান, গত সাড়ে তিন মাস সময়ে অন্তত ১২টি কয়লার চালান এসেছে। কিন্তু এবারের এই দুই চালানের মতো খারাপ কয়লা আর আসেনি। এমন মানহীন কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো অত্যন্ত ঝুঁকির। এতে যেকোনো সময় কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
শ্রমিকরা আরো বলছেন, শীত শেষে দেশের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এ অবস্থায় মনে হচ্ছে, মাতারবাড়ী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুত্সংকটে বিপাকে পড়ে।
শ্রমিকরা বলছেন, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবুল কালাম আজাদ ছিলেন সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ লোক। তাঁর আমলে দুর্নীতি করে প্রকল্পে অন্তত ৫০০ লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এঁদের অনেকে দলীয় পরিচয়ে চাকরি পেয়েছেন। এ কারণে মাটি মেশানো কয়লার চালান নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনেকে নীরব। শ্রমিকরা প্রথম চালানের কয়লা নিয়ে যেমন প্রতিবাদ করেছেন, দ্বিতীয় চালানের কয়লা নিয়েও প্রতিবাদ করছেন।
আবার গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে কয়লা অনলোডে নিয়োজিত মাতারবাড়ী বন্দরের শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এ কারণে জাহাজটিতে থাকা ১৩ হাজার টন কয়লা আনলোড করা বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, হাশেম অ্যান্ড সন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে তাঁরা বন্দরের পণ্য লোড-আনলোড করেন। ওই প্রতিষ্ঠান এবার ঈদ বোনাস এবং মাসিক বেতন নিয়ে গড়িমসি করছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দেনদরবার করে হাশেম অ্যান্ড সন্স কম্পানির মাধ্যমে শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ও বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করে মেঘনা গ্রুপের লোকজন মঙ্গলবার রাতেই জাহাজের বাকি কয়লা আনলোডের কাজ শুরু করে দেয়।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, মেঘনা গ্রুপের লোকজন দ্বিতীয় জাহাজটির সব কয়লা আনলোড করা শেষ করেছেন। এখন মেঘনা গ্রুপের বহির্নোঙরে থাকা প্রথম জাহাজটির কয়লা যেকোনো মূল্যে আনলোড করাই তাঁদের কাজ। শ্রমিকদের তাঁরা (মেঘনা গ্রুপের লোকজন) বলেছেন, প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়কে ম্যানেজ করে হলেও আটকা পড়া জাহাজের কয়লা আনলোড করার ব্যবস্থা করা হবে।
এসব বিষয়ে জানতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেনকে মোবাইলে না পেয়ে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
মেঘনা গ্রুপের লাখ কোটি টাকা পাচার তদন্তে এনবিআর
মেঘনা গ্রুপের মালিক মোস্তফা কামালের তরতর করে ওপরে উঠে যাওয়ার গল্প রূপকথাকেও হার মানায়। অর্থপাচার, শুল্ক ফাঁকি, কারসাজি, জালিয়াতিসহ নানা অপকর্মের অগণন উদাহরণ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সততার ভাবমূর্তি তৈরি করে ভালো উদ্যোক্তার আড়ালে দুর্নীতি আর অনিয়মকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তিনি। খোদ সরকারি দপ্তরের তথ্য-উপাত্তই বলছে, ৭০টি শিল্পের মালিক মোস্তফা কামালের টাকার কুমির হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে অবৈধ আয়। বলা হচ্ছে, গত ২০ বছরে তিনি অন্তত এক লাখ কোটি টাকা পাচার করেছেন, যার মধ্যে অন্তত ৮০ হাজার কোটি টাকাই আন্ডার ইনভয়েসিং।
আর হাজার হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর ও ভ্যাট ফাঁকি তো রয়েছেই। টাকা পাচারের বিষয়টি উচ্চতর তদন্তের জন্য একটি অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। একটি গোয়েন্দা সংস্থা, দুদক ও এনবিআরের তৈরি নথিপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মেঘনা গ্রুপের অনিয়ম-জালিয়াতির বিস্তারিত তুলে ধরে গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি এনবিআরকে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
গত বছর ২০ জুন এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, মোস্তফা কামাল ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে আমদানিতে ৭৯ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা আন্ডার ইনভয়েসিং, শুল্কায়নযোগ্য পণ্য-মোটরযান-নৌযানের বিপরীতে বাধ্যতামূলক বীমা পলিসি এড়িয়ে গিয়ে ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্সের এক হাজার ৫১৯ কোটি টাকা, সরকারের ভ্যাট, স্ট্যাম্প ডিউটি ও ব্যাংক কমিশনের এক হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন।
অর্থপাচার ও বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নিতে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন মোস্তফা কামাল। মেঘনা নদীর জায়গা দখল করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, অবৈধ দখলে নদী ভরাট করে নষ্ট করেছেন নদীর গতিপথ। বেসরকারি ৯টি ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে আট হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন তিনি, যার বেশির ভাগই ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।