<p>যে জেলায় দুস্থ মানুষের হার যত বেশি, সেই জেলায় সরকারের ত্রাণ বরাদ্দ তত কম দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যে জেলায় দুস্থ মানুষের হার কম, সেই জেলায় ত্রাণ বেশি দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনার ত্রুটি ও সমন্বয়হীনতার সমস্যা দূর করা না গেলে দেশে মানবিক বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি সহায়তা পর্যবেক্ষণের জন্য ‘দুর্যোগ সহায়তা মনিটরিং কমিটি’ নামের একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারি ত্রাণ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ত্রুটি ও সমন্বয়হীনতার অভিযোগের এ চিত্র তুলে ধরা হয়।</p> <p>নতুন এই সংগঠনের সমন্বয়ক ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এক মাসের চেয়ে বেশি সময় ধরে সারা দেশে প্রায় লকডাউন চলছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ করোনার কারণে যত না, তার চেয়ে খাদ্যসংকটে বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সরকারি ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার ত্রুটি ও সমন্বয়হীনতার কারণেই প্রকৃত দুর্গতরা সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।</p> <p>তিনি বলেন, এই কমিটি ত্রাণ বরাদ্দ কার জন্য কতটুকু হচ্ছে, আইন অনুযায়ী তা হচ্ছে কি না, অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা হচ্ছে কি না এসব বিষয় তদারকি ও সুপারিশ করবে।  </p> <p>সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৪ জেলায় যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে তার পরিমাণ টাকার অঙ্কে ৩৬৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। বর্তমানে দরিদ্র মানুষের হার সবচেয়ে বেশি কুড়িগ্রাম জেলায় (৭০.৮ শতাংশ), সবচেয়ে কম নারায়ণগঞ্জে (২.৬ শতাংশ)। কিন্তু এখন পর্যন্ত কুড়িগ্রামে মোট দরিদ্র জনসংখ্যার মাথাপিছু চাল বরাদ্দ মাত্র ৮৭৪ গ্রাম এবং মাথাপিছু টাকা বরাদ্দ মাত্র ৩ টাকা ৮৫ পয়সা। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জে দরিদ্র জনসংখ্যার মাথাপিছু চাল বরাদ্দ ২২ কেজি ৫৫৫ গ্রাম এবং মাথাপিছু টাকা বরাদ্দ ৮৮ টাকা ১৭ পয়সা।</p> <p>কুড়িগ্রামের পর সবচেয়ে বেশি দরিদ্র হার দিনাজপুরে (৬৪.৩ শতাংশ)। সেখানে দরিদ্রদের মাথাপিছু চাল ও টাকা বরাদ্দের পরিমাণ যথাক্রমে ৬৭২ গ্রাম ও তিন টাকা। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের পর দরিদ্রহারে কম হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ জেলা (৩.১ শতাংশ)। সেখানে দরিদ্রদের মাথাপিছু চাল ও অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ যথাক্রমে ২১ কেজি ৫১৭ গ্রাম ও ৯৫ টাকা ৮৩ পয়সা। দেখা যাচ্ছে যে জেলায় দরিদ্র মানুষের হার যত বেশি, সেই জেলায় সরকারের চাল ও টাকা বরাদ্দ তত কম।</p> <p>দুর্যোগ সহায়তা মনিটরিং কমিটির সদস্যসচিব উন্নয়নকর্মী রাখাল রাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নূরুল হক নূরসহ অনেকে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।</p>