<p>কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিলেট। শিলার আঘাতে বিভিন্ন এলাকায় টিনের বাড়িঘরসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খোলা আকাশের নিচে থাকা কয়েক শ গাড়ি। আহতও হয়েছেন অনেকে। ঝড়ের সময় থেকে কয়েকটি এলাকা ছাড়া পুরো সিলেট বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। </p> <p>রবিবার (৩১ মার্চ) রাত ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে হঠাৎ করে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। ১৫ মিনিটের মতো স্থায়ী ছিল। তবে রাত ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।</p> <p>জানা গেছে, রাত সোয়া ১০টার কিছু পরে তীব্র বেগে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া। এরপর শুরু শিলাবৃষ্টি। অনেক শিলার আকৃতি ৬ ইঞ্চিরও বেশি দেখা গেছে। হঠাৎ শিলাবৃষ্টি শুরু হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে খোলা আকাশের নিচে থাকা যানবাহন। ফলে কয়েক শ যানবাহনের কাঁচ ভেঙে যায়। এ ছাড়া শিলাবৃষ্টির আঘাতে টিনের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে আহত হন। </p> <p>নগরের নয়াসড়ক মাদরাসার সামনে শিলাবৃষ্টির কবলে পড়া তরুণ ব্যবসায়ী সাইয়্যিদ মুজাদ্দিদ বলেন, ‘হঠাৎ করে ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়েই শিলাবৃষ্টি হতে থাকে। এত বড় আকৃতির শিলাবৃষ্টি আমি আগে দেখিনি।’ অনেক মানুষ আহত ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, যানবাহনের ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের বাজারে বের হওয়ায় মানুষের ভিড় বেশি ছিল। তারা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য। কিন্তু আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটলেও তার আগেই অনেকে আহত হন। অনেক অটোরিকশার ছাদ শিলার আঘাতে ফুটো হয়ে যায়। অনেক গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়।’<br />  <br /> নগরের বাগবাড়ি এলাকায় বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েন হালিম আহমদ নামে প্রাইভেট কারচালক। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘ঝোড়ো বাতাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি দ্রুত গাড়ির কাছে আসি সেটিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। গাড়ির সামনের গ্লাস পুরোটাই ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। গাড়ির বিভিন্ন অংশ দেবে গেছে শিলাবৃষ্টির আঘাতে। আমি নিজে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি।’ তাঁর দাবি, রাস্তায় যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি দেখেছেন সে থেকে তার ধারণা, পাঁচ শতাধিক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিলাবৃষ্টিতে।</p> <p>কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হলে সিলেট বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। এর পর থেকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নগরের বেশির ভাগ এলাকায়ই অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। </p> <p>আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘বছরের এই সময়ে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিকে কালবৈশাখী বলা হয়ে থাকে। কালবৈশাখীতে শিলাবৃষ্টি হয়।’</p> <p>বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পর সিলেট বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। এখন কয়েকটি এলাকা ছাড়া কোথাও বিদ্যুৎ নেই। আমরা মাঠে রয়েছি। কাজ চলছে। সাহরির আগে যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা যায় সে চেষ্টা করছি।’</p>