<p><strong>[একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে সিংহের কথা উল্লেখ আছে]</strong></p> <p>সিংহ ফেলিডি পরিবারের প্যানথেরা গণের চারটি বৃহৎ বিড়ালের একটি। বর্তমানে আফ্রিকান সিংহ ও এশীয় সিংহ—এ দুটি উপপ্রজাতি টিকে আছে। আফ্রিকান সিংহ মোটামুটি আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে পাওয়া গেলেও অল্পসংখ্যক ভারতীয় সিংহ শুধু ভারতের গির বনে পাওয়া যায়। সিংহের বৈজ্ঞানিক নাম Panthera leo.</p> <p>সিংহের ইংরেজি নাম খরড়হ রোমান ভাষার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি লাতিন ভাষার লিও ও  প্রাচীন গ্রিকের লিওন থেকে এসেছে।</p> <p>বিড়াল প্রজাতির যত প্রাণী আছে তার মধ্যে সিংহের গর্জনই সবচেয়ে বেশি জোরালো। এরা ১১৪ ডেসিবল পর্যন্ত গর্জন করতে পারে। এই গর্জন পাঁচ মাইল দূর থেকেও শোনা যায়। সিংহ ঘণ্টায় ৫০ মাইল গতিতে দৌড়াতে পারে; তবে শুধু স্বল্প দূরত্বের জন্য। আর এ কারণে কোনো শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে তাকে খুব কাছ থেকে আক্রমণ শুরু করতে হয়।</p> <p>সিংহ জন্মের পর অন্ধ থাকে। তারা এক সপ্তাহ বয়সে চোখ খুলতে পারে এবং বয়স যত দিন দুই সপ্তাহ না হয়, তত দিন ভালো করে দেখতে পারে না। সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ সিংহের ওজন হয় ১৫০ থেকে ২৫০ কেজি এবং  স্ত্রী সিংহের ১২০ থেকে ১৮২ কেজি। শুধু পুরুষ সিংহের কেশর থাকে। এর রং যত গাঢ়, সিংহের বয়স তত বেশি। সিংহ মাংসাশী প্রাণী। জেব্রা, হরিণ, ইম্পালা, আফ্রিকান মহিষ, জিরাফ, শূকর ইত্যাদি এদের প্রধান খাদ্য।</p> <p>সিংহ বেঁচে থাকার জন্য গড়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ কেজি এবং সিংহীর পাঁচ থেকে ছয় কেজি মাংসের প্রয়োজন হয়। তবে সিংহ সর্বোচ্চ ৪০ কেজি এবং সিংহী ২৫ কেজি পর্যন্ত মাংস খেতে পারে। বিড়াল প্রজাতির যত প্রাণী আছে তার মধ্যে সিংহই একমাত্র প্রাণী, যার লেজের একেবারে শেষ প্রান্তে পশমের গোছা থাকে। দিনের বেলায় একটি সিংহ মানুষের মতো দেখতে পেলেও রাতের অন্ধকারে স্বল্প আলোতে মানুষের চেয়ে ভালো দেখতে পায়। সিংহের শ্রবণশক্তি অত্যন্ত তীব্র। অনুমান করা হয় ২০ হাজার থেকে ৩৯ হাজার সিংহ এখনো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।</p> <p>সিংহের দলকে প্রাইড বলে।</p> <p>সিংহের গড় আয়ুু ১৩ বছর। তবে অনুকূল পরিবেশে এবং পর্যাপ্ত খাবার পেলে এর চেয়ে বেশি বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারে।             </p> <p style="text-align: right;"><strong>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</strong></p>