<p>আলু বিশ্বের অন্যতম প্রধান ও টিউবেরাস ফসল, যা মাটির নিচে জন্মে। এটি সোলানেসিয়া গোত্রের অন্তর্গত একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। এর বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum এবং ইংরেজি নাম পটেটো। পটেটো শব্দটি এসেছে স্প্যানিশ পাতাতা থেকে। প্রথম দিকে ইতিহাসবিদ ও লেখকরা মিষ্টি আলু ও অন্যান্য সম্পর্কবিহীন উদ্ভিদের ক্ষেত্রে আলু নাম ব্যবহার করতেন বলে আলুর সঠিক আদি নিবাস জানা কঠিন। তবে ধারণা করা হয়, আলু ছিল আমেরিকার স্থানীয় ফসল। প্রি-কলম্বিয়ান সময়ে আমেরিকার অধিবাসীদের মধ্যে এর চাষাবাদ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সতেরো শতকের গোড়ার দিকে পর্তুগিজ নাবিকরা ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম আলু নিয়ে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলার গ্রামাঞ্চলে আলুর চাষ করা হয়।</p> <p>পৃথিবীর মানুষের প্রধান খাদ্য হিসেবে আলুর অবস্থান চতুর্থ। আলুর আগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছে যথাক্রমে ভুট্টা, গম ও চাল। বিশ্বের অনেক দেশে রুটি বা ভাতের বদলে আলু খাওয়ার প্রচলন থাকলেও আমাদের দেশে এখনো আলু পরিপূরক বা সহায়ক খাবার। এতে শর্করা, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন আছে।</p> <p>আমাদের দেশে দেশি ও উচ্চফলনশীল বিদেশি উভয় জাতের আলু চাষ করা হয়। দেশি জাতগুলোর মধ্যে আউশা, চল্লিশা, দোহাজারী লাল, ফেইন্তাশীল, হাসরাই, লাল পাকরী, লালশীল, পাটনাই প্রভৃতি এবং বিদেশি উন্নত জাতের মধ্যে হিরা, আইলসা, পেট্রোনিস, মুল্টা, ডায়ামন্ট, কার্ডিনাল, মন্ডিয়াল, কুফরী সিন্দুরী, চমক, ধীরা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আলু খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত এবং অনেক উপকারী। এটি আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্ক কর্মক্ষম রাখে, হজমে সহায়তা করে, মানসিক চাপ কমায়।</p> <p>আলুর রস ত্বকে লাগালে বিভিন্ন দাগ দূর হয়। আলুর খোসায় ভিটামিন ‘সি’ আছে, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। তবে অতিরিক্ত আলু খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত আলু খেলে ওজন বাড়ে, ডায়াবেটিক রোগীদের ডায়াবেটিস বেড়ে যায়।       ► ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p>