<p>চিরহরিৎ শব্দের অর্থ হলো চির সবুজ। উদ্ভিদবিদ্যায় চিরহরিৎ বৃক্ষ হলো সেসব উদ্ভিদ, যাদের পাতা প্রত্যেক ঋতুতেই সবুজ থাকে। এরা উষ্ণ ও আর্দ্রভূমিতে কিছু এলাকাজুড়ে বন আকারে জন্মে। অল্প ঠাণ্ডা শীতপ্রধান জলবায়ুর অধিকাংশ উদ্ভিদ প্রজাতিই চিরহরিৎ। বাকিরা পর্ণমোচী উদ্ভিদ। পর্ণমোচী হলো সেসব উদ্ভিদ, যাদের পাতা শীতকালে অথবা শুষ্ক ঋতুতে সম্পূর্ণ ঝরে যায়।</p> <p>যেসব অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেন্টিমিটারের বেশি, সেসব অঞ্চলেও চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায়। অত্যধিক বৃষ্টিপাতের জন্য এখানকার গাছপালা সারা বছরই সবুজ পাতায় ভরা থাকে।  শিশু, গর্জন, মেহগিনি, সেগুন, চাপালিশ, পাইন, লোহাকাঠ, কাঁঠাল, জাম, ডুমুর ইত্যাদি চিরহরিতের প্রধান বৃক্ষ। এসব বৃক্ষের কাঠ খুবই শক্ত ও ভারী। এ কাঠ গৃহনির্মাণ ও আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।</p> <p>গুল্ম ও বৃক্ষ উভয় ধরনের উদ্ভিদের মধ্যেই চিরহরিৎ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। পুরনো পাতা ঝরার সঙ্গে সঙ্গে অবিরত নতুন পাতা গজাতে থাকে বলে এদের পাতার অস্তিত্ব জন্মের কয়েক মাস পর থেকে শুরু করে কয়েক দশক পর্যন্ত বিদ্যমান থাকতে পারে। অধিকাংশ ক্রান্তীয় বনের বৃক্ষরা চিরহরিৎ বলে পরিচিত। এদের পাতার বয়স বাড়া এবং ঝরার সঙ্গে সঙ্গে সারা বছর ধরে নতুন পাতা প্রতিস্থাপন করে। পাতা একত্রে জন্মেও না, ঝরেও না। ফলে সারা বছর এই গাছগুলো সবুজ থাকে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান ও সিলেট অঞ্চলে এই বৃক্ষ বেশি দেখা যায়। শীতপ্রধান জলবায়ুতেও চিরহরিৎ বৃক্ষ নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে। তবে অল্পসংখ্যক চিরহরিৎ বৃক্ষ ৩০০ সেন্টিগ্রেডের নিচের তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে বলে অতি ঠাণ্ডা শীতপ্রধান জলবায়ুতে পর্ণমোচী উদ্ভিদের তুলনায় এদের সংখ্যা কম।</p>