অলংকার মানুষের রুচিবোধ, ব্যক্তিত্ববোধ, আর্থিক অবস্থা ও জীবনাচারের প্রকাশ ঘটায়। ফ্যাশন ও মডেলিংয়ের এ যুগে অলংকারের নিত্যনতুন ব্যবহারবিধি, রূপ ও পদ্ধতি প্রকাশিত হচ্ছে। ইসলাম বরাবরই সৌন্দর্যবোধকে পছন্দ করে। তবে সব বিষয়েই ইসলামের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।
আংটি ও হাতের বালা ব্যবহারের বিধান
মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ

আংটির ব্যবহার
পোশাকের ক্ষেত্রে দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম হলো আংটির ব্যবহার। ইসলামী শরিয়তে আংটি ব্যবহার করা শর্তসাপেক্ষে বৈধ। যেসব ধাতু কাফিরদের সঙ্গে কিংবা তাদের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ যেমন শিশা, পিতল, কাঁসা ও লোহার আংটি ব্যবহার করা মুসলমানদের জন্য মাকরূহ। পিতল, কাঁসা ইত্যাদি ধাতব কাফিরদের মূর্তি নির্মাণ ও আসবাবপত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়।
পুরুষের জন্য দুই শর্তে আংটির ব্যবহার করা জায়েজ। এক. রৌপ্যের আংটি ব্যবহার করবে। দুই. পাঁচ মাশা (৪.৮৬ গ্রাম) থেকে কম হতে হবে।
মহিলাদের জন্য আংটি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে যেকোনো ধাতুর অলংকার ব্যবহার করা বৈধ। আংটির ক্ষেত্রে কেবল যেকোনো পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্য ব্যবহার করা জায়েজ। অন্য ধাতুর আংটির ব্যবহার বৈধ নয়। পুরুষের জন্য স্বর্ণের আংটির ব্যবহার নিষিদ্ধ- (সূত্র : আহসানুল ফাতওয়া খণ্ড : ৮, পৃ. ৬৯-৭০/রদ্দে মুখতার, খণ্ড : ৫, পৃ. ২২৯)।
তবে অসুস্থতার কারণে বিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে অন্য ধাতুর আংটি ব্যবহার করা যাবে।
হাতের বালা ব্যবহারের বিধান
বিবাহিত অবিবাহিত নারীদের জন্য হাতে চুড়ি পরা বৈধ। তবে পুরুষদের জন্য হাতে চুড়ি, বালা, রঙিন সুতা, ব্রেসলেট ব্যবহার করা মাকরুহ- (বেহেশতি জেওর, বিদয়াত-কুপ্রথা অধ্যায়)।
কারী তৈয়ব সাহেব (রহ.) লিখেছেন, 'বর্তমান যুগে শিখ সম্প্রদায় তাদের হাতে একটি চুড়ি তাদের জাতীয় বিশেষ পোশাক হিসেবে ব্যবহার করে- (তাশাব্বুহ ফিল ইসলাম)।
তা ছাড়া পুরুষরা হাতে চুড়ি ও বালা পরিধান করলে তা নারীদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে যায়। আর ইসলামে নারী-পুরুষের ও পুরুষ-নারীর সাদৃশ্য হওয়া নিষিদ্ধ।
হাদিস শরিফে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদের এবং পুরুষদের সাদৃশ্য ও বেশভূষা অবলম্বনকারী নারীদের অভিশাপ দেন।
লেখক : ইসলামী গবেষক
সম্পর্কিত খবর