ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ মহররম ১৪৪৭

বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের সম্মান ও ফজিলত

শেয়ার
বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের সম্মান ও ফজিলত

'রমজান মাস, যে মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল করা হয়েছে। এটি মানুষের জন্য পথনির্দেশনার প্রমাণপঞ্জি ও সত্য মিথ্যার মানদণ্ড।' (সুরা বাকারা : ১৮৫) হাঁ, বাস্তবিকই সত্য-মিথ্যার পার্থক্যের এক মহা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন আখেরি নবী (সা.)-এর নেতৃত্বে সাহাবায়ে কেরাম ঐতিহাসিক বদর প্রান্তরে। তাই সেদিনকে ইয়াওমুল ফুরকান বা সত্য মিথ্যার পার্থক্যের দিন বলা হয়।

সত্যপথের অনুসারী অল্পসংখ্যক রোজাদার মুসলমান, বিশাল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত মিথ্যার অনুসারী কাফের-মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করার মাধ্যমে সত্য-মিথ্যার চিরপার্থক্য সূচিত হয়ে যায়। এ যুদ্ধে মুসলমান মুজাহিদের সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৭০ জন মুহাজির এবং অন্যরা আনসার। অন্যদিকে নবী ও দ্বীন-ধর্মবিরোধী কাফের-বেইমানদের সৈন্যসংখ্যা ছিল এক হাজার।
এই বিপুল সৈন্যশক্তির বিরুদ্ধে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে তাঁর সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আল্লাহর ওপর ভরসা করে মরণপণ লড়াইয়ের মাধ্যমে কাফেরদের অহংকার ধূলোয় মিশিয়ে দেন এবং তাদের কাছ থেকে চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে আনেন। আল্লাহপাক তাই সাহাবাদের সম্মানে বলেছেন, তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট আর তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।

বদরী সাহাবাদের ফজিলত : বদরী সাহাবাদের সবচেয়ে বড় ফজিলত হলো, আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় নবীর জবানে তাদের জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'হে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আমার সাহাবারা, তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত।

' অন্য এক হাদিস থেকে জানা যায়, বদরী সাহাবাদের জন্য জাহান্নাম হারাম। (মুসলিম : ২৪৯৫) আরো এক হাদিস রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা তাঁদের আগে পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। (মুস্তাদরাক : ৪/৮৭)

নামেই বরকত : আল্লাহ তায়ালা বদরী সাহাবাদের নাম এবং তাঁদের আলোচনার মধ্যে অসংখ্য বরকত রেখেছেন। যেমন বুরহান হলবী এবং দাওয়ানী বর্ণনা করেন, তাঁদের নামের উসিলা ধরে যে দোয়া করা হয়, তা কবুল করা হয়। এটা অভিজ্ঞতার দ্বারা প্রমাণিত।

অনেকে বলেন, বহু মানুষ বদরী সাহাবাদের নামের বরকতে আল্লাহর ওলি হয়েছেন। আর এটাও বাস্তব সত্য, যেসব রোগীর জন্য বদরী সাহাবাদের উসিলায় সুস্থতার দোয়া করা হয়েছে, তারা আল্লাহর রহমতে আরোগ্য লাভ করেছে। একজন আরেফ বিল্লাহ বলেন, আমি যত রোগীর মাথায় হাত রেখে ইখলাসের সঙ্গে বদরী সাহাবাদের নাম পড়েছি আল্লাহ তায়ালা তাদের সুস্থতা দান করেছেন। এমনকি মৃত্যুর সময় হয়ে গেলে তার মৃত্যুও সহজ হয়েছে।

কিভাবে দোয়া করবেন : যারা বদরী সাহাবাদের নামের উসিলায় নিজের মাগফিরাত ও প্রয়োজন পূরণের দোয়া করবে তাদের জন্য উত্তম হলো, তাঁদের প্রত্যেকের নামের পরে 'রাজিয়াল্ল্লাহু আনহু' পড়া। এভাবে পড়বে, 'মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম', আবু বকর (রা.), উমর বিন খাত্তাব (রা.) এভাবেই শেষ পর্যন্ত।

বদরী সাহাবাদের নামের সম্মান করে সাফল্য অর্জনের তাওফিক মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি।

লেখক : পরিচালক, ফতোয়া সংকলন প্রকল্প (মা.ফি.ই.বা)

 

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ