<p>ভারতের ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিশেষ প্যানেল জরুরি বৈঠকে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়ার এক দিনের মাথায় দেশজুড়ে টিকা দেওয়ার মহড়া বা ড্রাই রান শুরু করল কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবারের জরুরি বৈঠকে টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয় এবং গতকাল শনিবার থেকে শুরু হয় ওই মহড়া।</p> <p>টিকা প্রদানের চূড়ান্ত কর্মসূচি শুরুর আগে মহড়া দিয়ে দেখে নেওয়া হচ্ছে, এই কর্মসূচির জন্য ভারতের সামগ্রিক পরিকাঠামো কতটা প্রস্তুত। এরই মধ্যে প্রায় এক লাখ স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে টিককরণ কর্মসূচি চালানোর জন্য। শুধু তা-ই নয়, দুর্গম এলাকগুলোয়ও যাতে এই কর্মসূচি কোনো রকম বাধা ছাড়াই উতরে যাওয়া যায়, সেদিকটাও খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে বলে জানান এক সরকারি কর্মকর্তা। সরকার ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো যখন দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ হ্রাসের বার্তা দিচ্ছে, সে সময়ই টিকা প্রদানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হলো।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত দুই কোটি ছাড়াল : ভারতে আপাতত সংক্রমণ হ্রাসের সুসংবাদ মিললেও যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি একেবারে উল্টো। পশ্চিমের দেশটিতে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থামানো যাচ্ছে না। গত শুক্রবার দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে টিকাদান কার্যক্রম নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে থাকায় ট্রাম্প প্রশাসন তীব্র সমালোচনার শিকার হচ্ছে।</p> <p>মার্কিন সরকার ২০২০ সালের মধ্যে দেশটির দুই কোটি মানুষকে টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা বেশ ভিন্ন। নতুন বছরের প্রথম দিন গত শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির মাত্র ২৮ লাখ মানুষকে টিকার দুই ডোজের প্রথমটি দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সিং হোমের বাসিন্দা ও কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সোয়া এক লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এক দিনের হিসাবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যার নতুন রেকর্ড এটি। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিচারে বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যু সবচেয়ে বেশি।</p> <p>করোনার নতুন ধরনে আতঙ্কিত নয় চীন : বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও আতঙ্কিত নয় চীন। কারণ হিসেবে চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কর্মকর্তা জু ওয়েনবো রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, টিকার কার্যকারিতায় করোনাভাইরাসের নতুন ধরন কোনো প্রভাব ফেলবে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার চীনে সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর এক দিন পরই যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসে চীনে প্রথম একজনের সংক্রমণের তথ্য মেলে। তবে ওয়েনবো বলেছেন, ‘নতুন রূপান্তরিত ধরনটি আগের রূপান্তরিত ধরনগুলোর তুলনায় খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এটি খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারে না।’</p> <p>বৈশ্বিক পরিস্থিতি : পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাবে, গতকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আট কোটি ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ৩৬৮। এরই মধ্যে এতে মারা গেছে ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ১৬৬ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছে পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ৯৬০ জন। সূত্র : এএফপি, ওয়ার্ল্ডোমিটার।</p>