ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭
অষ্টম শ্রেণি কৃষি শিক্ষা

চতুর্থ অধ্যায় : কৃষি ও জলবায়ু

অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
চতুর্থ অধ্যায় : কৃষি ও জলবায়ু
জৈব সার ব্যবহারে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা ও মাটিস্থ অণুজীবের কার্যকারিতা বাড়ে

ফসলের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য জলবায়ু ও পরিবেশগত উপাদান স্বাভাবিক থাকা প্রয়োজন। কোনো অঞ্চলে যখন জলবায়ু ও পরিবেশগত অবস্থার কারণে ফসলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হয় সে অবস্থাকে প্রতিকূল পরিবেশ বলে। বাংলাদেশের কৃষি উত্পাদনে প্রতিকূল পরিবেশ খরা, লবণাক্ততা ও বন্যা। বিরূপ আবহাওয়া স্বল্পস্থায়ী হলেও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে।

 

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

♦ প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টিকারী জলবায়ুগত উপাদান—৪টি।

♦ বাংলাদেশে প্রতিবছর আবাদি জমি কমছে—১ শতাংশ হারে।

♦ ফসলের জৈব রাসায়নিক ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টাকে বলে—ফসলের অভিযোজন ক্ষমতা।

♦ কোনো নির্দিষ্ট মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম বা না হলে সে অবস্থাকে বলে—খরা।

♦ গমের খরা সহনশীল জাত—৩টি।

♦ দক্ষিণাঞ্চলে মাটিতে লবণাক্ততা বেড়ে যায়—শুষ্ক মৌসুমে।

♦ কম লবণাক্ততাসহিঞ্চু ফসল হলো—গম, কমলা, নাশপাতি।

♦ বাংলাদেশের বন্যাপ্রবণ এলাকা হলো—উত্তর পূর্বাঞ্চল।

♦ বন্যার পানির উচ্চতার ভিত্তিতে বন্যাপ্রবণ জমিকে ভাগ করা হয়—৪ ভাগে।

♦ বন্যাপীড়িত এলাকায় খামার করতে হবে—ব্রয়লার মুরগির।

♦ ব্রয়লার মুরগি বাজারজাত করা যায়—৩০ দিন পর।

♦ পরিবেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর আচরণ যখন পশুপাখি পালনের উপযোগী থাকে না তখন তাকে বলে—কৃষির প্রতিকূল পরিবেশ।

♦ পুকুরে পানির উচ্চতা কমে যায়—গ্রীষ্ম ঋতুতে।

♦ আগাম শিলাবৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়—রবি ফসল।

♦ শীতকালে গরুর বাছুর আক্রান্ত হয়—নিউমোনিয়ায়।

 

অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

১। শুষ্ক মৌসুমে জমির লবণাক্ততা বেড়ে যায় কেন?

উত্তর : শুষ্ক মৌসুমে সূর্যের তাপে মাটির তাপ বেড়ে যায়। ফলে বাষ্পীভবন ঘটে ও মাটি থেকে পানি তাপে বাষ্প হয়ে উড়ে যায়। এ পানির সঙ্গে মাটির নিচের স্তরের লবণ ভূ-পৃষ্ঠে চলে আসে। পানি বাষ্প হয়ে উড়ে গেলেও লবণ মাটিতে থেকে যায় ও উপরিভাগে লবণের আস্তরণ পড়ে। এ কারণে শুষ্ক মৌসুমে জমির লবণাক্ততা বেড়ে যায়।

২। মাটিতে জৈব সার ব্যবহার করা হয় কেন?

উত্তর : মাটিতে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গঠন উন্নত হয়। মাটি ঝুরঝুরে হয়। ফলে মাটির পানি ধারণক্ষমতা ও মাটিস্থ অণুজীবের কার্যকারিতা বাড়ে। সর্বোপরি ফলন ভালো হয়। এ জন্য মাটিতে জৈব সার ব্যবহার করা হয়।

৩। মাটিতে রসের ঘাটতি হলে কী সমস্যা হয়? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : মাটিতে রসের ঘাটতি হলে গাছ প্রয়োজনীয় পানি ও পানির সঙ্গে মিশ্রিত খনিজ লবণ গ্রহণ করতে পারে না। ফলে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং প্রয়োজনীয় রসের অভাবে নেতিয়ে পড়ে। এমনকি এতে গাছ মারাও যেতে পারে।

৪। শিলাবৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: শিলাবৃষ্টি হলে বৃষ্টির সঙ্গে যে বড় বড় বরফখণ্ড পড়ে সেগুলো মাঠের ফসল, চারাগাছ, শাখা-প্রশাখা, ফল ইত্যাদিতে আঘাত করে। এতে চারাগাছ ভেঙে যায়, ফলে ঝরে পড়ে বা ফেটে যায় এবং আঘাতপ্রাপ্ত ফল দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এসব কারণে শিলাবৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর।

 

উদ্দীপক : আবহাওয়া ও জলবায়ু সব সময়ই পরিবর্তনশীল। মাঝেমধ্যে এই আবহাওয়া ফসল, পশুপাখি ও মানুষের জন্য বৈরী আকার ধারণ করে। কিছু ফসল ও প্রাণী এই বৈরী পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারে, কিছু পারে না। এই বৈরী আবহাওয়া প্রভাব ফেলে মানুষের জীবনযাত্রা, পরিবেশ ও কৃষির ওপর।

ক। জলাবদ্ধতা কাকে বলে?

উত্তর : অতিবৃষ্টি  বা বন্যার কারণে কোনো স্থানে পানি জমে থাকলে অর্থাত্ স্থানটি জলে আবদ্ধ থাকলে তাকে জলাবদ্ধতা বলে।

খ। প্রতিকূল পরিবেশে ফসল ভালো জন্মায় না কেন?

উত্তর : প্রতিকূল পরিবেশ যেমন দীর্ঘস্থায়ী বন্যা, লবণাক্ততা, বেশি বা কম তাপ ইত্যাদির প্রভাবে গাছে শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন উপাদান যেমন পানি, খনিজ পদার্থ ইত্যাদির অভাব ঘটে। তখন ফসল ওই পরিবেশে বাড়তে পারে না। এতে ফলন কমে যায়। এ জন্য প্রতিকূল পরিবেশের ফসল ভালো জন্মায় না।

গ। উদ্দীপকে যে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে তা বাংলাদেশের কৃষি খাতে কী কী আশঙ্কাজনক ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে, ব্যাখ্যা করো।

ঘ। উক্ত পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা যায়, মতামত দাও।

গ-ও ঘ-এর উত্তর সংকেত:

উদ্দীপকে আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। জলবায়ুজনিত কারণে বাংলাদেশের কৃষি খাতে আশঙ্কাজনক ক্ষেত্রগুলো হলো খরা, লবণাক্ততা, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় । এসব যে বাংলাদেশের কৃষি খাতের জন্য হুমকিস্বরূপ তা আলোচনা করতে হবে।

অন্যদিকে ঘ প্রশ্নের উত্তরে লিখতে হবে জলবায়ুর পরিবর্তন ও কৃষির ওপরে এর বিরূপ প্রভাব নিয়ে। বিরূপ পরিবেশে ফসল উত্পাদনের কৌশল উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সেই সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন রোধ করা যায় কী করে সেসব লিখতে হবে।

            গ্রন্থনা : এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ