<p>হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান দাবি করেছেন, সামরিক জোট ন্যাটো তার আসল ‘শান্তিপূর্ণ’ ও ‘প্রতিরক্ষামূলক’ প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে আগ্রাসনে সমর্থন দেওয়াকে এজন্ডা হিসেবে নিয়েছে। সেই সঙ্গে ইউক্রেন সংঘাতে পশ্চিমা সম্পৃক্ততার সোচ্চার সমালোচক হাঙ্গেরির নেতা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের আরো বাড়তি পদক্ষেপ অবশেষে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনবে।</p> <p>অরবান শুক্রবার আকস্মিক সফরে মস্কোতে যান। সেখানে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তিনি ‘শান্তি রক্ষা মিশনে’ ছিলেন। দুই নেতা ইউক্রেন সংঘাতের শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে অরবান স্বীকার করেন, মস্কো ও কিয়েভ খুব ‘দূরে’ অবস্থান করছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি’। এ ছাড়া তিনি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথাও জানান।</p> <p>এর আগে সপ্তাহের শুরুতে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী কিয়েভেও সফর করেন। সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। অরবান তার এ সফরে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও আলোচনার পক্ষে ছিলেন।</p> <p>এদিকে মস্কো সফরের দিনই নিউজউইকে অরবানের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি ন্যাটোর সঙ্গে জড়িত সর্বশেষ প্রবণতাগুলোকে তুলে ধরেন। হাঙ্গেরি ১৯৯৯ সাল থেকে এই জোটের সদস্য।</p> <p>অরবান তার লেখায় গত কয়েক বছরে ন্যাটোর বিভিন্ন অভিযান ও উদ্যোগে বুডাপেস্টের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর জোর দেন। পাশাপাশি জোটের দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্য পূরণের বিষয়েও আলোকপাত করেন। অরবানের মতে, ২৫ বছর আগে তার দেশ যে ন্যাটোতে যোগদান করেছিল তা একটি ‘শান্তি প্রকল্প’ ও একটি ‘প্রতিরক্ষা সামরিক জোট’ ছিল। তবে ‘আজ শান্তির পরিবর্তে যুদ্ধের অনুসরণে; প্রতিরক্ষার পরিবর্তে আক্রমণে’ উল্লেখ করে অরবান দু:খ প্রকাশ করেন।</p> <p>এ ছাড়া হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোটের বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র সম্প্রতি ইউক্রেনে ন্যাটো অভিযান শুরুর সম্ভাবনার বিবেচনা করছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনে ফরাসি সেনা মোতায়েনের কথা অস্বীকার করেন না। যদিও তার পরামর্শটি দ্রুত জার্মানি ও অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল। তবে ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধান তার পর থেকে একাধিক অনুষ্ঠানে ধারণাটি নিয়ে বিতর্ক বাড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে মে মাসে এস্তোনিয়া ও পার্শ্ববর্তী লিথুয়ানিয়া ইউক্রেনে লজিস্টিক ও অন্যান্য বেসামরিক মিশনের জন্য সেনা পাঠানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে।</p> <p>অরবানের নিবন্ধ অনুসারে, যদি ন্যাটো এখন কৌশল পরিবর্তন না করে তবে জোটটি ধ্বংস হয়ে যাবে।</p> <p>সূত্র : আরটি</p>