<p>পারফরম্যান্স যেমন অনেক প্রশ্নকে আড়ালে নিয়ে যায়, তেমনি এর অন্যথা হলে সেসবই আবার সামনে চলে আসে। বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ের এখন হয়েছে সেই দশা। ধারাবাহিকতার অভাব তো নিত্যসঙ্গীই। আলোচনার কেন্দ্রে আছে ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটারেরই বাঁহাতি হওয়াটা।</p> <p>অবশ্য পাকিস্তানেও এই ব্যাটিং অর্ডার নিয়েই একাদশ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। তখন সাদমান ইসলাম, মমিনুল হকরা প্রশ্ন উঠতে দেননি ভালো ক্রিকেট খেলে।</p> <p>টপ অর্ডারের কাছে রানের আকুতিকিন্তু ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে টপ অর্ডারের পুরনো ‘ব্যাধি’টা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। চেন্নাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডার।</p> <p>দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেনের ৮২ রান ছাড়া বাকি তিনজনই ইনিংস শুরু করলেও বড় করতে পারেননি। দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান আউট হন যথাক্রমে ৩৩ ও ৩৫ রান করে। চারে নামা মমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। কানপুরে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের আগে তাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিন্তার জায়গা টপ অর্ডার।</p> <p>সফরকারী দলের কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহের কথায়ও এই ব্যাপারটা উঠে এসেছে, ‘ভালো শুরুর পর তারা আউট হয়ে যাচ্ছে, এটা নিয়ে আমরা একটু চিন্তিত। আমি নিশ্চিত, এটা নিয়ে তারাও হতাশ। তারা ভালো করতে মুখিয়ে আছে। সত্যি বলতে গত ম্যাচে আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি।’</p> <p>টপ অর্ডারের সামর্থ্যের পুরো প্রতিফলন অবশ্য পাকিস্তানেও ঘটেনি। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৮৩ বলে সাদমানের ৯৩ রানের ইনিংসটিতে দৃঢ়তার পরিচয় ছিল। কিন্তু বাকি ব্যাটাররা সে অর্থে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। ওই ইনিংসে জাকির ১২, নাজমুল ১৬ এবং মমিনুলের ব্যাট থেকে এসেছিল ৫০ রান। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে অবস্থা আরো শোচনীয়। এক পর্যায়ে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। হাতুরাসিংহে মনে করেন, উইকেটে ব্যাটারদের থিতু হওয়া জরুরি। তাঁর মতে, ‘ভালো শুরু পেলে ইনিংস বড় করতে হবে। এটাই বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। ক্রিকেটে কেউ ৩০ বল খেলে ফেললে, উইকেটে থিতু হওয়া জরুরি। কিভাবে প্রতিরোধ গড়তে হবে ভারতের এই দল তা ভালো করেই জানে। আমরাও এটা সম্পর্কে অবগত। তাই আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে ভালো ব্যাটিং করে যেতে হবে।’</p> <p>দীর্ঘ সময় ব্যাটিং আর বড় স্কোরের প্রথম শর্ত, দুই ওপেনারের কাছ থেকে ভালো একটা শুরু। হাতুরাসিংহে মনে করেন, দলকে ভালো শুরু এনে দেওয়া নিয়ে ওপেনাররাও ভাবছেন, ‘ওপেনাররা আমাদের চেয়েও বেশি ভাবছে এটা নিয়ে। তারা ভালো অবস্থায় আছে। আশা করছি, এবার আরো ভালো করবে। সব ব্যাটারই নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছে।’ তা একাদশে কি তাহলে বাঁহাতি ব্যাটারের আধিক্যই থাকছে? হাতুরাসিংহে অবশ্য এই মুহূর্তে এটাকেই বাংলাদেশের সেরা কম্বিনেশন বলছেন। তবে কানপুর টেস্টে সেরা একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি বাংলাদেশ কোচ। আজ ম্যাচের আগের দিন উইকেট দেখার পর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে স্কোয়াডে থাকা ডানহাতি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের একাদশে অন্তর্ভুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে। হাতুরাসিংহের কথায় অবশ্য ‘যদি-কিন্তু’ও আছে, ‘শুধু ডানহাতি বলে সে একাদশে ঢুকে যাবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। একাদশে পরিবর্তন আসতেই পারে, তবে সেটা সব কিছু বিবেচনা করে।’</p>