<p>দূরের বিদেশও কখনো কখনো খুব কাছের বলে মনে হতে পারে। বাংলাদেশ দলের কাছে সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডিনসের আর্নস ভেল স্টেডিয়ামকে অনেকটা সে রকমই লাগার কথা, যেখানে আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় সুপার এইটের পথে এগিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে তাদের সামনে দাঁড়াচ্ছে নেদারল্যান্ডস। প্রতিপক্ষের জন্য নতুন হলেও ক্যারিবীয় দ্বীপদেশের সাগরঘেঁষা মাঠটি এই বাংলাদেশ দলের অনেকের কাছেই ভীষণ চেনা, যেখানে কিনা দীর্ঘ বিরতির পর স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগেই খেলা হয়ে যাচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তদের। আর্নস ভেলে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে।</p> <p>ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশের সেই টেস্ট ম্যাচের ১০ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আবার ব্যাট-বলের আন্তর্জাতিক লড়াই ফিরছে সেখানে। ২০১৩ সালে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি হয়েছে এই মাঠে। ওয়ানডে তারও আগে, ২০১২ সালে। আর্নস ভেলে হওয়া তিনটি টেস্টের দুটিতেই ক্যারিবীয়দের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের সব ম্যাচ সেন্ট ভিনসেন্টেই। সেখানকার উইকেটও অনেকটা বাংলাদেশের মতোই। ২০১৪ সালের টেস্টে অভিষেকেই তাইজুল ইসলামের ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়াটা সেই সাক্ষ্যই দেয়। তাই ডাচদের মুখোমুখি হওয়ার সময় দূর পরবাসেও ঘরের স্বাদ বলে কিছু একটা বাংলাদেশের জন্য থাকছেই। বিষয়টা অনেকটা হয়ে যাচ্ছে ‘হোম গ্রাউন্ডে’ খেলার মতোই।</p> <p>২০০২ সালের অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ডাচদের হারিয়েই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আবার হারের তিক্ত স্বাদ ফিরিয়ে দিয়েছিল এই ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষ। তাদের সামনেও যখন আছে সুপার এইটে যাওয়ার হাতছানি, তখন পাল্টাআক্রমণ সামলানোর ব্যাপক প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে হচ্ছে নাজমুলদের। অবশ্য বিশ্বকাপ দল গড়ার সময় থেকেই সে প্রস্তুতি আছে বাংলাদেশের। এমনকি বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের ১৫ জনের চূড়ান্ত স্কোয়াডে ঢুকে যাওয়ার নেপথ্যেও এই ডাচরা। তাদের দলে বেশির ভাগই ডানহাতি ব্যাটার হওয়ায় ‘ম্যাচ-আপ’ হিসেবে একজন বাড়তি বাঁহাতি স্পিনার নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সেটি অবশ্য সাকিব আল হাসান কোনো কারণে চোটে পড়ে যান কি না, সেই ভাবনা থেকে। যদিও তানভীরের খেলার সম্ভাবনার চেয়েও বড় বিষয় এখানে সাকিব। প্রথম দুই ম্যাচের বিবর্ণ পারফরম্যান্সে সেরা অলরাউন্ডারের র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান তো হারিয়েছেন বটেই, তিনি নেমে গেছেন পাঁচেও। আর্নস ভেলের উইকেট এবং ডাচদের ব্যাটিং অর্ডারে ডানহাতিদের আধিক্য মিলিয়ে সাকিবের চেনা ছন্দে দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাই যেন উঁকি দিচ্ছে বেশি।</p> <p>অবশ্য সাকিবের ব্যাটেও হাসি দেখার প্রত্যাশা থাকা অমূলক নয়। তবে সাকিব একা নন, ব্যাটে রান নেই অধিনায়ক নাজমুলেরও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উইকেটে টিকে থাকার প্রচেষ্টায় পার পেয়ে গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আবার আগের চেহারায় লিটন কুমার দাস। তার ওপর প্রোটিয়াদের মাত্র ১১৩ রান তাড়া করেও জিততে না পারার ধাক্কা সামলে এঁরাও নিশ্চয়ই দলকে আবার জয়ের ছন্দ ধরিয়ে দিতে চাইবেন। চাইবেন সুপার এইটের পথে দলকে অনেকটা এগিয়ে নিতেও। সেই সঙ্গে দারুণ ফর্মে থাকা তাওহিদ হৃদয় এবং অভিজ্ঞ মাহমুদ উল্লাহরাও চাইবেন প্রয়োজনে দলের ত্রাণকর্তা হতে। এর সঙ্গে যদি সাকিবের ফর্মে ফেরার চাহিদাটা মিলেই যায়, তাহলে তো কথাই নেই। আর্নস ভেল নামের ‘হোম গ্রাউন্ডে’ সেটি হবে তো?</p>