<p>ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় খেলা বোধ হয় দাঁড়িয়াবান্ধা। খেলাটা শুধুই ছোটদের। বড়দের জন্য একেবারে বেমানান। খেলাটার স্থানীয় নাম গাদি। বারোমাসি খেলা হলেও বর্ষাকালেই এই খেলাটার প্রচলন ছিল বেশি। লম্বা টেনিস কোর্টের মতো কোর্ট তৈরি করে সেখানে খেলত ছেলে-মেয়েরা। </p> <p>মোটামুটি পাঁচটি ঘর কেটে খেলা হতো দাঁড়িয়াবান্ধা। পাঁচ ঘরে খেলোয়াড়সংখ্যা ছয়জন। অর্থাৎ দুই দল মিলিয়ে মোট ১২ জনের খেলা। কিন্তু গ্রাম্য ছেলে-মেয়েরা অত নিয়ম-কানুনের ধার ধারবে কেন? পাঁচজনের জায়গায় আটজনের খেলায়ও তাদের যেমন আপত্তি নেই, তেমনি তিনজন খেলোয়াড় নিয়েও অনায়াসে চালিয়ে নেওয়া যায় খেলাটা। </p> <figure class="image"><img alt="দাড়িয়াবান্ধার কোট" height="492" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/04/21/my1182/2_3.jpg" width="400" /> <figcaption>দাঁড়িয়াবান্ধার কোর্ট</figcaption> </figure> <p>ওপরের ছবিতে ১ নম্বর ঘরটি মূল বা গাদিঘর, ২ নম্বরটি নুনঘর। প্রথমে দুই দলের মধ্যে টস হতো। টসজয়ী দলটা ঢুকত ১ নম্বর ঘরের ভেতর। অন্য দল তাদের রাখত কড়া পাহারায়। টসে হারা দলটির একজন দাঁড়াত ১ ও ২ নম্বর ঘরের মাঝখানের দাগে, আরেকজন দাঁড়াত ১ ও ৩ নম্বর ঘরের মাঝখানে দাগের ওপর। খেলা শুরু হলে টসজয়ী দলটার প্রথম উদ্দেশ্যই প্রতিপক্ষের পাহারাকে ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে পড়া। তারপর সব দাগের সব প্রতিপক্ষকে টপকে সব ঘর স্পর্শ করে আবার প্রথম ঘরে ঢুকে পড়া। </p> <p>সবাইকে ১ নম্বর ঘরে ঢুকতেই হবে তার কোনো মানে নেই যেকোনো একজন ঢুকলেই চলবে। সেটা করতে পারলেই তারা পেয়ে যাবে এক গাদি বা এক পয়েন্ট। এক গাদি অর্জন করতে অবশ্যই সেই খেলোয়াড়কে নুনঘর ঘুরে আসতে হবে। প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে ১ নম্বর ঘরে ঢোকার মুহূর্ত পর্যন্ত যদি প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড় তাদের যেকোনো একজনকে নিজের দাগের ওপর দাঁড়িয়ে ছুঁয়ে দিতে পারে, তবে সেই দান বাতিল। তখন টসজয়ী দলকে দাগে দাঁড়াতে হবে আর প্রতিপক্ষ ১ নম্বর ঘরে ঢুকে নতুন দান শুরু করবে।</p> <p>একই কোর্টে আরেক ধরনের গাদি খেলার প্রচলন ছিল। নুনগাদি। ২৫-২৬ বছরের ব্যবধানে স্মৃতি বড় প্রতারণা করছে। অনেক চেষ্টা করেও তাই সেই খেলার নিয়ম-কানুন মনে করতে পারছি না। গাদি বা দাঁড়িয়াবান্ধা মূলত বারমাসি খেলা, তবে বর্ষাকালেই খেলটা জমত বেশি।</p>