<p>একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই শহরের গণ্ডি পেরিয়ে ডিশ চ্যানেলগুলো ছড়িয়ে পড়ে অজপাড়াগাঁয়ে। টেলিভিশনের পাশাপাশি এখন বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে গেছে কম্পিউটার। হাতে হাতে উঠে এসেছে মোবাইল ফোন। ছেলেমেয়েরা এখন ভার্চুয়াল ভিডিও গেমের নেশায় বুঁদ। তাছাড়া জনসংখ্যার বৃদ্ধির বাড়তি চাপে বিলীন হয়ে যাচ্ছে গ্রামগঞ্জের খেলার মাঠ, পতিত জমি। অথচ কী আনন্দেই না কেটেছে আমাদের শৈশব।<br /> ছেলেবেলার সেসব খেলাধুলার নিয়ম কানুন যেমন বৈচিত্রময় ছিল, বিচিত্র সেগুলোর নামও। গাদি, গাছগাদি, জল-ডাঙা-ডিং, বউতোলা, খেটে খেলা, লইলাং (ডাংগুলি)। এছাড়াও পরিচিত নামের খেলা তো আছেই। মার্বেল, হা-ডু-ডু গোল্লাছুট, কুতকুত, কানামাছি ভোঁ ভোঁ।<br />  <br /> খেলতে গেল দল লাগে। জাতীয় বা আর্ন্তজাতিক খেলায় দল নির্দিষ্ট করা থাকে। যে দেশের খেলোয়াড় সে শুধু সেই দেশের হয়েই খেলতে পারে। কিন্তু খোলাটা যখন গ্রামে তখন দল  ভাগ করা একটা সমস্যা বটে। দেখা যায় দু’জনের মধ্যে খুব ভাব। তারা একই দলে খেলতে চায়। এতে হয় কী, দুই দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই নিরেপেক্ষ সিস্টেমে খেলোয়াড় বাছাই করে দল তৈরি করতে হয়। আমরা ছোটকালে দেখেছি যেসব খেলা দুই দলের মধ্যে হয় সেই খেলাগুলোতে খেলোয়াড় বাছাইয়ের পদ্ধতি ছিল দুই রকম। একটার নাম ওপেন টু বায়োস্কোপ। আরেকটা পাতাপুতি দিয়ে ভাগানো। আমরা পাতাপুতি ভাগানোটাই বেশি পছন্দ করতাম। কারণ এতে সময় অনেক কম লাগে। আবার নিরপেক্ষও। <br />  <br /> <a href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/04/08/1378533"><span style="color:#3498db;">ওপেন ওপেন টু বায়োস্কোপের নিয়মকানুন আগেই জানিয়েছি। </span></a>আজ আমরা পাতাপুতি নিয়ে একটু কথা বলব।<br />  <br /> পাতাপুতি ভাগোনোর সময়ও দুজন রাজা ঠিক করা হয় আগে। তারপর তাঁরা খোলা মাঠে বসে থাকে। বাকি খেলোয়াড়রা জোড়ায় জোড়ায় গলাগলি করে বের হয়ে যায় বিভিন্ন দিকে। হাত মুঠো করে জোড়া ধরে আবার ফিরে আসে তারা রাজাদের সামনে। জোড়ার একজনের মুঠোয় হয়তো ফুল লুকানো আছে, আরেকজনের হাতে হয়তো আছে পাতা। হাত মুঠো রেখেই তারা রাজাদের জিজ্ঞেস করে, ‘ফুল নেবে না পাতানেবে?’</p> <p>দুই রাজার যেকোনো একজন হয়ত উত্তর দেবে, ‘আমি ফুল নেব।’ তখন যার হাতে ফুল আছে সে মুঠো খুলে ফুল দেখিয়ে সেই রাজার দলে ভিড়ে যাবে। এভাবে সবকটা জোড়া একে একে এসে দুই রাজার দল ভারী করবে। দুজন সমমানের খেলোয়াড় দিয়ে জোড়া তৈরি করা হয়। এতে দুই দলের শক্তিতে ভারসাম্য থাকে। দল গঠনে নিরপেক্ষতাও বজায় থাকে শতভাগ।<br />  </p>