<p>সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি-জামাত ও জঙ্গিগোষ্ঠী সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনে প্রবেশ করে দেশের উন্নয়ন প্রতীকগুলোতে হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেছেন, ‘সাধারণ ছাত্রদের দাবি এবং সরকারের অবস্থান প্রতিটি স্তরে ছিল একই রকম। ছাত্রদের সঙ্গে সরকারের যখন শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করছিল, তখন বিএনপি-জামাত ও জঙ্গিগোষ্ঠী সারাদেশে ধ্বংষ যজ্ঞ চালিয়েছে। যেখানেই সরকারের উন্নয়নের প্রতীক পেয়েছে সেখানেই হামলা হয়েছে।’</p> <p>সোমবার (২২ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের এক বৈঠকে তিনি চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। বিকেল ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের সামনে গত কয়েকদিন ধরে চলমান আন্দোলন ঘিরে দুর্বত্তদের কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।</p> <p>তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার কিন্তু গুলি করার নির্দেশ দেয় নাই, চরম ধৈর্য ধরেছে। কিন্তু এ সুযোগে তৃতীয় পক্ষ বিটিভি, সেতুভবন, মেট্রোরেল ও ইন্টারনেট অবকাঠামোতে অগ্নিসংযোগ করেছে। তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ বিএনপি, জামাত-শিবির, জঙ্গীরা যে তাণ্ডব করেছে তা দমনে আমাদের শক্ত হতে হয়েছে।’</p> <p>কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থী ও সরকারের অবস্থান অভিন্ন ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের যে দাবি ছিল আর সরকারের কার্যক্রম কিন্তু একই জায়গায় ছিল। সরকার ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী ২০১৮ সালের পরিপত্র পুর্নবহালের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে আপিল বিভাগে একটি দরখাস্ত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ছাত্ররা যা চাচ্ছিল সরকার সেটি আদায়ে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আদায়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়।’</p> <p>সরকার ও ছাত্রদের অভিন্ন দাবির মধ্যে বিএনপি-জামাত ও জঙ্গিগোষ্ঠী তৃতীয় পক্ষ হিসেবে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালিয়েছে মন্তব্য করে মোহাম্মদ এ আরাফাত আরো বলেন, ‘আন্দোলন ঘিরে যখন অগ্নি সন্ত্রাস এবং সরাসরি জঙ্গি আক্রমণ দেখলাম, তখন বোঝা গেল সাধারণ ছাত্র এবং সরকারের অভিন্ন অবস্থানের বাইরে একটি তৃতীয় পক্ষ ঢুকে গেছে। ছাত্ররাও কিন্তু বলা শুরু করল অগ্নি সংযোগ, জঙ্গি আক্রমণ তারা করছে না। ছাত্ররা এ কথাও বলেছে, তারা কারও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হতে চায় না। এটা আজকে পরিষ্কার তার বিএনপি-জামাতের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হতে চায়নি। আক্রমণকারীরা টার্গেট করেছিল নিরীহ মানুষকে। পুলিশকে হত্যা করে বাঁশের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখেছে। ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের পাঁচতলার ছাদ থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এভাবে জঙ্গি কায়দায়, নির্বিচারে, অমানবিক প্রত্যেকটি হত্যা প্রমাণ করে এগুলো পরিকল্পিত।’</p> <p>দেশজুড়ে হতাহতের ঘটনায় আক্রমণকারীরই দায়ী মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার জন্য যখন পুলিশ-বিজিবি পাঠানো হয়েছে, তখন আক্রমণকারীদের ঠেকাতে গিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া, সাধারণ মানুষ যখন আক্রান্ত হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সামনে সামনে এগিয়ে এসেছে। এর ফলে হতাহতের যেসব ঘটনা ঘটেছে, আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই হতাহতের দায় কার? হতাহত হওয়ার জন্য দায়ী কে?, যে আক্রমণকারী সে, নাকি যে আক্রান্ত সে?’</p> <p>তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জনগণের জনামাল ও সম্পদ রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই মুহুর্তে সচেষ্ট আছে। সরকার কারফিউ দিয়েছে, কারফিউ দেওয়া হয়েছ সন্ত্রাসীদের দমনের জন্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত হাতে সন্ত্রাসীদের দমন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য অপশক্তিকে সামন্যতম ছাড় দিবেন না। উনি শক্ত হাতে অপশক্তিকে দমন করবেন।’</p>