<p>ভারতের সঙ্গে একই দিনে বাংলাদেশে বলিউডের ছবি মুক্তি পাবে, সাফটা চুক্তিকে অনেকটাই 'আপগ্রেড' করে এমন সিদ্ধান্তের দিকে যাচ্ছেন বাংলাদেশের হল মালিকরা। এই বিষয়ে একাধিক বৈঠক ও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ হল মালিকরা আমদানি করা হিন্দি ছবি আমদানি করে চালাতে একমত হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের গ্রিন সিগন্যালও পেয়েছে বলে জানালেন প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন। জানা গেছে, দেশীয় প্রযোজকদেরও এমন সিদ্ধান্তে অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে।</p> <p>বৃহস্পতিবার বিকেলে মিয়া আলাউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই মুহূর্তে আমাদের দেশে অনেকগুলো হল বন্ধ। দর্শক আসছে না হলে। সারা দেশের হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কনটেন্ট সংকট, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমরা সারা দেশের হল মালিকরা একমত হয়েছি যে আমরা ভারতের ছবি নিয়ে আসব। এর আগে মামলা-মোকদ্দমা করে পুরনো হিন্দি সিনেমা নিয়ে এসেছি। কিন্তু পুরনো কোনো সিনেমা আমরা আর আনতে চাই না। আমরা চাই, বলিউড ও কলকাতার ছবি সেখানে যেদিন মুক্তি পাবে আমাদের এখানেও একই দিন মুক্তি পাবে।'</p> <p>এই পরিকল্পনার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ হল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পুরনো হিন্দি ছবি এনে হলে দর্শক আনা সম্ভব নয়। খুব বেশি হলে মাসখানেক আগে মুক্তি পাওয়া হিন্দি ছবি আনতে হবে। হল বাঁচাতে ভালো সিনেমার বিকল্প নেই। বিশ্বের অন্যতম সিনেমা হল সিনেওয়ার্ল্ড বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ভারতীয় ছবি এনে আমরা পরীক্ষামূলক দেখতে পারি হল বাঁচাতে পারি কি না।'</p> <p>নওশাদ আরো বলেন, 'আমাকে আসলে মিটিংয়ে ডাকা হয়নি। কিন্তু আমি বিভিন্ন আলোচনায় হল বাঁচানোর কথা বলেছি। এই যে সিনেমা অনেকগুলো বানিয়ে রাখা হয়েছে, বানানো হচ্ছে। যদি বড় সিনেমা হলগুলো কলাপস করে, তাহলে এসব সিনেমা কোথায় দেখাবে তারা। বলাকা খুলছে না, শ্যামলী খুলছে না। হিন্দি ছবি দিয়ে এখন আমাদের হল বাঁচানো ছাড়া উপায় কী?'</p> <p>বলিউডের ছবি আনার জন্য আপনাদের অনুমতি দেবে কেন? এই প্রশ্নের জবাবে প্রদর্শক সমিতির নেতা মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, 'যখন দেশ পেঁয়াজসংকটে পড়েছে, আমদানি করতে হচ্ছে। দেশে সিনেমা সংকটে পড়েছে, এখন সেটা আমদানি করা যাবে না? সরকার হল বাঁচাতে অনেক সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করছে। আগামী জানুয়ারি থেকে ঋণ দেওয়া হবে হল মালিকদের। এই ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। সিনেমা হল না বাঁচলে এই ঋণ শোধ করা মুশুকিল আছে। আমরা গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছি বলেই বলতে পারছি।'</p> <p>মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, 'প্রযোজক সমিতির সদস্যরা আমাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে মত দিয়েছেন। কেননা বিদেশি সিনেমা তারাই আমদানি করবেন। এই অনুমোদন প্রযোজকদের বাইরে কাউকে দেওয়া হবে না, দেওয়া হলে সব হযবরল হয়ে যাবে। খুব শিগগিরই জানা যাবে।</p> <p><br /> সাফটা চুক্তির আওতায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে চলচ্চিত্র বিনিময়ের সুযোগ থাকলেও ব্যাপক পরিসরে প্রেক্ষাগৃহে হিন্দি সিনেমার প্রদর্শন হয় ২০১৫ সালে। দেশে আনা হয় সালমান খানের ওয়ান্টেড।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১০ সালে যখন আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা সংশোধনীর সময়, একটি ছোট ভুলের কারণে হিন্দি ছবি আমদানির সুযোগ পায়। তবে ভুল নয়, এবার হিন্দি ছবি দেশে আনা হবে সেই সাফটা চুক্তিকে আরো সংশোধন করে। পুরনো নয়, নতুন ছবি আনা হবে।<br />         </p>