<p style="text-align: justify;">প্রতি বছরই ঈদকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে ওঠে নানা প্রতারক চক্র। এবারও তারা নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও মানুষের মাঝে আতঙ্ক কমছে না। তবে তাদের ব্যাপারে সজাগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি তারা সব নাগরিককে এ বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।</p> <p style="text-align: justify;">জানা গেছে, গত বছর থেকে একটি প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে নারীদের টার্গেট করে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। কখনো সোনাদানা, আবার কখনো মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে চক্রটি। সম্প্রতি এমন একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। চক্রটি ফরিদপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় বাসা ভাড়া নিত। পরে সেই বাসার মালিককে টার্গেট করে টাকা পয়সা সোনাদানা হাতিয়ে তারা চলে যেত। চক্রটিকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তবে এই চক্রের বাইরেও ঢাকায় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫টি চক্র রয়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন বাহিনীর গোয়েন্দারা।</p> <p style="text-align: justify;">গেল বছর মিরপুর, শ্যামলী ও পুরান ঢাকায় ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে নারীদের টার্গেট করে চক্রটি। তারা কোনো নারী হাসপাতালে একা ঘুরছেন দেখলেই তার সাথে সখ্য গড়ার চেষ্টা করে। এরপর তাকে কোনো কাগজ দিয়ে তা পড়ানোর চেষ্টায় থাকে। আবার কেউ কেউ হাতে হাত মিলিয়ে আন্তরিকতা প্রকাশ করে। আর সেই হাত মুখের কাছে নিলেই সেই ব্যক্তি অন্যরকম হয়ে যান। প্রতারক চক্র তাকে যা যা করতে বলে তাই তিনি করে বসেন। </p> <p style="text-align: justify;">গত বছর ঢাকায় এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটার পর টনক নড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। চক্রটির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারও করে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ। পরে তাদের মাধ্যমে জানতে পারে, এক ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করে প্রতারকরা। শয়তানের নিঃশ্বাস নামের এই মেডিসিন মেলে অনলাইনে। যদিও এই মেডিসিন কোনো ওষুধের দোকানে বিক্রি হয় না বলে দাবি গোয়েন্দাদের। তবে চক্রটির সদস্যদের দাবি, তারা অনলাইনে এই মেডিসিন কিনেন। এখন ফেসবুক পেজ খুলেও বিক্রি হয়।</p> <p style="text-align: justify;">ডিএমপি পুলিশ বলছে, যেহেতু ব্যাপারীদের কাছে গরু বিক্রির অনেক টাকা থাকে তাদের টাকাগুলো লুটে নেওয়ার জন্য প্রতারক চক্র এই ড্রাগটি ব্যবহার করতে পারে। আবার যারা ক্রেতা হাটে যায় তারাও সঙ্গে করে অনেক টাকা পয়সা নিয়ে যায়। তাদের ওপরও সেটি প্রয়োগ করতে পারে। এছাড়াও এই ড্রাগটি ভাড়াটিয়া বেশে বা অন্য কোনো ছদ্মবেশে খালি বাসায় প্রবেশ করে কোনো নারী বা পুরুষকে প্রয়োগ করে তার সর্বস্ব লুটে নিতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">ডিএমপি বলছে, এবার আর অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা তেমন নেই। কমেছে তাদের কর্মকাণ্ড। কারণ প্রতি মাসেই গোয়েন্দারা তাদের কম বেশি গ্রেপ্তার করছে। গত কয়েক মাসের অভিযানে তাদের তৎপরতা কমেছে। এজন্য তারা নানা উদ্যোগও নিয়েছে। পাশাপাশ ঘরমুখো মানুষ ও যাত্রী সাধারণকে সচেতনও করছেন তারা।</p> <p style="text-align: justify;">এ ব্যাপারে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, নগরবাসীর উদ্দেশে অনুরোধ, আপনারা অপরিচিত কারও কাছ থেকে কোনো কিছু খাবেন না। তার সংস্পর্শে যাবে না। তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখবেন। এই ধরনের একটি চক্র কাজ করছে যদি বিষয়টি আপনার মাথায় থাকে তাহলে নিজেই সতর্ক থাকবেন।</p> <p style="text-align: justify;">বাসায় যদি কেউ একা থাকেন আর সেই বাসায় যদি কেউ অপরিচিত আসে তবে তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলবেন। যেন আপনাকে খুব সহজে সে আক্রান্ত করতে না পারে। আপনি সতর্ক থাকলেই প্রাথমিকভাবে এই চক্রের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।</p> <p style="text-align: justify;">পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রটিকে ধরার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছি। সেটি ঈদ কিংবা অন্য কোনো উৎসবে প্রতারক চক্র যাতে এই ড্রাগটি প্রয়োগ করে সর্বস্ব লুটতে না পারে তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি চক্রটিকে আমরা ধরতে ও অবৈধভাবে আসা ড্রাগটিও বন্ধ করতে সক্ষম হব।</p>