<p style="text-align:justify">গোপালগঞ্জে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দল এবং স্থানীয় জনতার মধ্যে সংঘর্ষে নিহত কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারের মরদেহ নিজ বাড়ি ঢাকার জুরাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি। এমনকি পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারেনি। এ ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি করেছে দিদারের স্বজন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।</p> <p style="text-align:justify">শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শওকত আলী দিদারের মরদেহ বুঝে নেন তার স্ত্রী রাবেয়া রহমান ও শ্বশুর হাবিবুর রহমান। পরে তারা মরদেহ নিয়ে ঢাকার জুরাইনের উদ্দেশে রওনা হন। এ ঘটনায় দলীয় ও পারিবারিক সিদ্ধান্তের পর মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।</p> <p style="text-align:justify">নিহত শওকত আলী দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখি, যারা ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জে আসছে তাদের ওপর হামলা করা হয়। তখন আমি আমার স্বামীর মোবাইলে ফোন দিই। তখন একজন পুলিশ অফিসার আমাকে বলেন, আপনার স্বামী মারা গেছেন। তখন আমি গোপালগঞ্জে আসি। মামলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে অবশ্যই মামলা করা হবে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘আমার দুটি ছেলে। বড় ছেলে ক্লাস ওয়ানে আর ছোট ছেলে কেজিতে পড়ে। এদের নিয়ে আমি কিভাবে বাঁচব। কোনো কূলকিনারা দেখছি না। আমি এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।’</p> <p style="text-align:justify">নিহত শওকত আলীর বড় বোন মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাইকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছি।’</p> <p style="text-align:justify">নিহত শওকত আলী দিদারের শ্বশুর হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার জামাইকে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এস এম জিলানী সাহেব আসছিলেন গোপালগঞ্জে। সেই সঙ্গে আমার জামাইও আসে। পথে গোপালগঞ্জে হামলা করা হয়। এতে আমার জামাই মৃত্যুবরণ করে। আমি চাই, যাতে এর কঠিন শাস্তি হয়। মৃত্যুর সাজা মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত।’</p> <p style="text-align:justify">গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ডাক্তার কে এম বাবর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে হত্যার প্রতিবাদে কর্মসূচি আহ্বান করা হবে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘জিলানী ভাইয়ের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এখানে পোস্টার ছেঁড়া বা তোরণ ভাঙার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয়। সবই বানোয়াট।’</p> <p style="text-align:justify">গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ও কমিশনারের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। এ ধরনের হত্যাসহ অসংখ্য নেতা আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার ও শাস্তি দাবি করছি।’</p> <p style="text-align:justify">এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি জেলা সদরের পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকা সোলায়মান ম্যানশন থেকে শুরু করে। বৃষ্টির কারণে মিছিলটি সংক্ষিপ্ত করা হয়। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন হিরা।</p> <p style="text-align:justify">বক্তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ যেন রেহাই না পায়, সে জন্য অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।</p>