<p>টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত নলকূপ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি নলকূপের সঙ্গে বরাদ্দকৃত পাইপসহ মালপত্র কম দেওয়া হচ্ছে। সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।</p> <p>জানা গেছে, সরকারিভাবে মির্জাপুর উপজেলায় পঞ্চম বরাদ্দের ৩৬২টি গভীর নলকূপ বিতরণ ও স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিটি নলকূপের জন্য সুবিধাভোগীরা নিয়ম অনুযায়ী ১০ হাজার ৫০০ টাকা করে সরকারি কোষাগারে ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন। ওই তালিকা অনুসারে সোমবার সকাল থেকে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া সুবিধাভোগীদের মধ্যে নলকূপের মালপত্র বিতরণ করা হচ্ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, মালপত্রের মধ্যে চার ইঞ্চি ১০০ ফুট ও ১০ ফুটের দুটি ফিল্টার, দেড় ইঞ্চি ২৮০ ফুট পাইপসহ ৪০০ ফুট, ১০ ফুট সিলেকশন বালু, ৫৫০ পিস ইট, প্রয়োজন অনুযায়ী গোবর, ৩০ ফুট সাদা বালু, পাঁচ ব্যাগ সিমেন্টসহ প্রয়োজনীয় মালপত্র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে নলকূপ স্থাপন করবে। এর সঙ্গে এক হাজার লিটারের একটি পানির ট্যাংক ও এক ঘোড়া একটি মোটরও স্থাপন করার কথা। পরে নলকূপের চারপাশ পাকাকরণ ও ট্যাংক বসানোর জন্য ছয় ফুট উচ্চতার একটি হাউস নির্মাণ করার কথাও রয়েছে। মিস্ত্রিদের খাবার বিলও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী বাহার উদ্দিনের নির্দেশে মিস্ত্রি মেহেদী হাসান ও বিএস শ্রমিক মাদব চন্দ্র বিশ্বাস প্রতিটি নলকূপের সঙ্গে ৪০০ ফুট পাইপের স্থলে চার ইঞ্চি ৮০ ফুট, ১০ ফুটের দুটি ফিল্টার ও দেড় ইঞ্চি ২৫৫ ফুট পাইপ বিতরণ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাও আবার সুবিধাভোগীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মির্জাপুর অফিসে এসে তা গ্রহণ করছেন এবং নিজ খরচে বাড়ি নিচ্ছেন। এ সময় সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে বকশিশের কথা বলে টাকাও নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি নলকূপের সঙ্গে ৩৫০ পিস ইট ও তিন ব্যাগ সিমেন্ট দেওয়া হচ্ছে এবং সিলেকশন বালি, সাদা বালি, গোবর, পরিবহন খরচ ও মিস্ত্রিদের খাবার বিল সুবিধাভোগীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। </p> <p>মিস্ত্রি মেহেদী হাসান ও বিএস শ্রমিক মাদব চন্দ্র বিশ্বাস জানান, অফিসার তাঁদের যেভাবে বিতরণের নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবেই বিতরণ করা হচ্ছে।</p> <p>মালপত্র নিতে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা জানতাম না ৪০০ ফুট পাইপ বরাদ্দ। এখন জানলাম। অনেককেই সকাল থেকে চার ইঞ্চি ৮০ ফুট, দেড় ইঞ্চি ২৫৫ ফুট ও ১০ ফুটের দুটি ফিল্টার দেওয়া হয়েছে।’ <br /> জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মির্জাপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. বাহার উদ্দিন বলেন, ‘আমি বাইরে আছি। পরে কথা বলব।’  </p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নুরুল আলম সংবাদকর্মীকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। </p> <p>টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়সারুল ইসলাম বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।</p>