<p>চাঁদপুরে পুলিশ কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন হত্যার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে- বালুখেকো সেলিম চেয়ারম্যান ও তার ছেলে চিত্র নায়ক শান্ত খান, কচুয়া থানার উপপরিদর্শক মামুনুর রশিদ এবং ফরিদগঞ্জে এক কনস্টেবল ও এক যুবক। চাঁদপুরের আলোচিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, বালুখেকো সেলিম খান গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।</p> <p>সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যার পর সদর উপজেলার বাগড়া বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজ এলাকা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর থেকে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বাগড়া বাজারে বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে ধরা পড়ে। এ সময় জনতা তাকে এবং ছেলে চিত্র নায়ক শান্ত খানকে পিটিয়ে হত্যা এবং তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।</p> <p>এদিকে, জেলার কচুয়া থানার উপপরিদর্শক মামুনুর রশিদকে হত্যা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। বিকেলে এমন ঘটনা ঘটে কচুয়া বাজারে। তবে কি কারণে হত্যাকাণ্ড তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ।</p> <p>চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় থানার গেট ভেঙে একদল লোক ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শাহাদাত হোসেনের (১৮) বাড়ি পাশের জেলা লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। এই ঘটনায় আরো কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়।এ সময় পুলিশের এক কনস্টেবলও ইটের আঘাতে প্রাণ হারান। এই ঘটনার পর রাতে ফরিদগঞ্জ থানায় কোনো পুলিশকে দেখা যায়নি।</p> <p>প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে। বিকাল সাড়ে ৫টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল থানায় প্রবেশের চেষ্টাকালে গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। <br /> এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে শাহাদাত হোসেন (১৮) ও এমরান হোসেন (৩৮) নামে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দ্রুত তাদেরকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাদাত হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হলেও তাদের মধ্যে আহত এমরানের বাড়ি ফরিদগঞ্জের গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের আদশা গ্রামের। ঘটনা সম্পর্কে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ জীবন বাঁচাতে গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতার ইটের আঘাতে একজন কনস্টেবল প্রাণ হারান।</p> <p>এদিকে, দুপুরের পর থেকে উল্লসিত জনতা চাঁদপুর শহরসহ বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল এবং মিষ্টি বিতরণ করেন। তারা সেনাবাহিনীর গাড়ি বহরের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে আনন্দ প্রকাশ করেন। নানা বয়সী মানুষের সঙ্গে নারী ও শিশুরাও সড়কে নেমে আসেন।</p> <p>অন্যদিকে, বিক্ষুব্ধ জনতা চাঁদপুর শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় পতিত সরকারের কাউকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। রাতে চাঁদপুরে সেনা সদস্যরা সড়কগুলোতে টহল দিতে দেখা গেছে।</p>