<p>রাজনীতিকে যদি ‘জনপ্রিয়তা আর কৌশলের খেলা’ বলা হয়ে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে সেই খেলায় জয়ী হয়েছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছেলে খাঁন মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এবার নিজেও তৃতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে তার সহধর্মিণী মঞ্জুয়ারা বেগমও দ্বিতীয় বারের মতো জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।</p> <p>এক পরিবার থেকে তিন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ায় এলাকাবাসী এক ছাদের নিচেই পাচ্ছে সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যকে। বগুড়ায় জেলায় এমন পরিবার নেই আর দ্বিতীয়টি।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে টানা পাঁচ বারের ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন সিরাজুল ইসলাম খাঁন রাজু। পাঁচ বার ইউপি চেয়ারম্যান থেকে টানা তিনবার হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।</p> <p>সিরাজুল ইসলাম খাঁন রাজু ২০২০ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগেরে সভাপতির দায়িত্ব পান। এক বছর পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে সেখানে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান তার বড় ছেলে খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী।</p> <p>এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকার প্রার্থী হয়েছিলেন সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। এ কারণে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির সাথে আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতায় কপাল পোড়ে তার।</p> <p>দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তার বড় ছেলে খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী। জাপার প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরুলের বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি।</p> <p>ছেলে এমপি নির্বাচিত হওয়ার প্রায় মাস পাঁচেক পর বাবা সিরাজুল ইসলাম খান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ফের প্রার্থী হন। এবার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় তার নিজ দলেরই একজন এবং আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত ২১ মে ভোট গণনা শেষে চেয়ারম্যান পদে রাজুকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।</p> <p>এদিকে রাজুর স্ত্রী আদমদীঘি আইপিজে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুয়ারা বেগম দ্বিতীয়বারের মতো বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি আছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও। উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতির দায়িত্ব রয়েছেন তিনি।</p> <p>নিজ পরিবারের সদস্যদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, ‘মানুষ আমাকে ভালোবেসে বার বার নির্বাচিত করেছেন। এবার কঠিন মুহূর্তেও জনগণ আমার পাশে ছিলেন। আমি এবং আমার পরিবার এর প্রতিদান দিতে মানুষের বিপদে-আপদে সবসময় পাশে থাকতে চাই।’</p>