<p>দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাতে পাবনা ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় একই এলাকার মহাসিন প্রামানিকের ছেলে মো. আশিক প্রামানিকের নাম উল্লেখ করে আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। </p> <p>থানায় অভিযোগ দায়েরকারী খায়রুন নাহার রত্না জানান, তাঁর স্বামী সোহান পারভেজ ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার সাঁড়ার ইউনিয়নের গোপালপুরে নিজবাড়িস্থ মেসার্স তানজি এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। তিনি সিমেন্ট ও ব্যাটারির ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা করছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী আশিক প্রামানিক তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। তাঁর দাবিকৃত চাঁদা না দিতে অস্বীকার করায় শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে আশিক প্রামানিক দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ তাঁর ৫-৬ জন সহযোগীকে নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এই সময় দোকান বন্ধ থাকায় তারা দোকানের শাটার ভাংচুর করে। দোকানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করে ও খুলে নেয়। এই সময় বাড়ির লোকজন বের হলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলার চেষ্টা করে। অবস্থা বেগতিক দেখে জরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশি সহযোগিতা চাওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আলামত পেয়ে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। </p> <p>তিনি আরও জানান, বর্তমানে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে সন্ত্রাসী আশিক প্রামানিকসহ তাঁর লোকজন প্রাণনাশসহ নানা রকম ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদান করছেন। </p> <p>এলাকায় খোঁজ নিয়ে ও ঈশ্বরদী থানা সুত্রে জানা যায়, আশিক প্রামানিক এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। থানার এক এএসআই-এর নিকট থেকে পুলিশের হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি নিয়ে পুলিশ পরিচয়ে ৩’শ বোতল ফেনসিডিল আটক করে। পরে ওই ফেনসিডিল ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তে পুলিশের ওই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়, যা চলমান রয়েছে। এছাড়াও আশিক প্রামানিক চাঁদা দাবি করে সাঁড়ার বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।</p> <p>প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মাহিন আলী, প্রতিবেশী তহমিনা খাতুন ও শিহাব হাসান জানান, আশিক প্রামানিক এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। তাঁর নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় থেকে সন্ত্রাসী ও মাদকের কারবার করে। </p> <p>এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মো. আশিক প্রামানিক জানান, আমি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করি না। আমি পুলিশদের সহযোগিতা করি। এই জন্য মাদক ব্যবসায়ীরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। পুলিশের হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি নিয়ে মাদক আটক ও টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন আশিক। আর খায়রুন নাহার রত্নার স্বামীর সঙ্গে রাগারাগি হওয়ায় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করে বিষয়টি সাঁড়া ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদারকে জানিয়েছেন বলে জানান আশিক।  </p> <p>ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের ঘটনাটি সিভিটিভি ফুটেজ থেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। অপরাধীর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।</p>