<article> <p style="text-align: justify;">এবার ইউরোপের বাজারেও বঙ্গোপসাগরের পোয়া মাছের চাহিদা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে মাছটির ফত্না বা ব্লাডারের (বায়ুথলি) চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদিন ধরে সামুদ্রিক পোয়া প্রজাতির মাছ ও মাছের ফত্নার বাজার চীন ও হংকংয়ের দখলে ছিল।</p> <p style="text-align: justify;">এবার আমেরিকার বাজারে পোয়া মাছ ও মাছের ফত্না রপ্তানির সুযোগ হওয়ায় স্থানীয় বাজারও এখন অত্যন্ত চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">বর্তমানে হংকং, চীন ও আমেরিকার বাজারে এক কেজি সাদা পোয়া মাছের ফত্না বিক্রি হচ্ছে ১৫ লাখ টাকায়।</p> <p style="text-align: justify;">দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার থেকেই সামুদ্রিক এই মাছটি রপ্তানি হয়ে আসছে। কক্সবাজারে একসময় এই প্রজাতির মাছ রপ্তানির সঙ্গে ১৮টি কারখানা জড়িত ছিল। কিন্তু তখন এ রকম দাম ছিল না।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">ফলে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দেয়। বর্তমানে কক্সবাজারে মাত্র দুটি ও চট্টগ্রামে দুটি কারখানা থেকে এ জাতীয় মাছ রপ্তানি হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশের বাজারে সামুদ্রিক এই মাছটির দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় রপ্তানিকারকদের পাশাপাশি সাগরের জেলেরা মাছ শিকারে তৎপর হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে পোয়া প্রজাতির অনেক প্রকারের মাছ রয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এর মধ্যে পাঁচ প্রজাতির অর্থাৎ লাল পোয়া, কালো পোয়া, সোনালি পোয়া, তিন দাঁতের পোয়া ও সাদা পোয়া রপ্তানি হয়ে থাকে।</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্রের (বুরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তারেকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, বঙ্গোপসাগরের পোয়া মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে (Otolithoides Pama)। এসব মাছ শীতকালেই জেলেদের জালে ও বড়শিতে বেশি ধরা পড়ে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সন্নিহিত সাগরে এই প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ে। পোয়া মাছের বায়ুথলি ওষুধ প্রস্তুতকাজে ব্যবহৃত হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সেই সঙ্গে স্যুপ হিসেবেও অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে থাকে।</p> <p style="text-align: justify;">কক্সবাজারে সাগর ফিশ এক্সপোর্ট প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আবদুল শুক্কুর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি নব্বই দশক থেকে চীন ও হংকংয়ের বাজারে সামুদ্রিক পোয়া প্রজাতির মাছ ও ফত্না রপ্তানি করে আসছি। গেল বছর থেকে আমেরিকার বাজারেও পাঠাচ্ছি। বিদেশের বাজারে এখন হোয়াইট ক্রোকার জো ফিশের ফত্নার প্রতি কেজির দাম ১৫ লাখ টাকা।’</p> <p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, তবে অন্যান্য প্রজাতির পোয়া মাছের দাম এত বেশি না। সবচেয়ে বেশি দাম কেবল সাদা প্রজাতির পোয়ার। কক্সবাজারে তাঁর কারখানায় সামুদ্রিক পোয়া প্রজাতির মাছ সূর্যের তাপে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।</p> <p style="text-align: justify;">আবদুল শুক্কুর আরো জানান, প্রতি কেজি ৫০ ডলার হিসাবে সামুদ্রিক অন্যান্য পোয়া প্রজাতির এক টন মাছ বিমানে শিগগিরই আমেরিকায় পাঠানো হবে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র তাঁর প্রতিষ্ঠানই আমেরিকায় সামুদ্রিক মাছ (সি ফুড) রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে বলে জানান তিনি।</p> <p style="text-align: justify;">গত শুক্রবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম কক্সবাজারে সাগর ফিশ এক্সপোর্ট কারখানা পরিদর্শন করেন। এ সময় সামুদ্রিক সাদা পোয়া মাছের ফত্নার এমন দাম শুনে আশান্বিত হয়ে সাগরে মাছটির রক্ষণাবেক্ষণসহ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ আরো বেগবান করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।</p> <p style="text-align: justify;">এ সময় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান কমোডর (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, কক্সবাজারের সাগর এলাকায় পোয়া প্রজাতির মাছের বংশ বৃদ্ধির ব্যাপারে যা করণীয় তাই করার সহযোগিতা দেওয়া হবে।</p> </article>