<p style="text-align: justify;">বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি, হামলা-পাল্টা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পর গতকাল শ‌নিবার দুপুর থে‌কে সব ধর‌নের যাত্রীবা‌হী প‌রিবহন চলাচল বন্ধ র‌য়ে‌ছে।</p> <p style="text-align: justify;">বরিশাল মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আলী আশরাফ ভুঞা ব‌লেন, বাস শ্রমিকদের দুটি পক্ষ এবং মাহেন্দ্র টেম্পোর (থ্রি-হুইলার) শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">তিনি আরো বলেন, বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। এর জেরে সন্ধ্যা ৭টার বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।</p> <p style="text-align: justify;">ঘটনাস্থলে থাকা এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, সন্ধ্যার পর বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ১৫-২০টি মাহেন্দ্র টেম্পো ও তিন-চারটি বাস ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বলে জানান পরিদর্শক। </p> <p style="text-align: justify;">তি‌নি আরো ব‌লেন, নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি। তবে ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো শহরে এসে আটকা পড়ে। পরে রাতে সেগুলোর চলাচল স্বাভাবিক হয়। </p> <p style="text-align: justify;">থ্রি-হুইলারচালক সোহেল বলেন, বাস শ্রমিকরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে বাস চলাচল বন্ধ করেছে। আমরা পাবলিক সার্ভিস দিতেছিলাম। এ সময় বাস শ্রমিকরা এসে আমাদের ওপর হামলা করেছে। তারা ৭০-৮০টি থ্রি-হুইলার ভেঙে ফেলেছে।</p> <p style="text-align: justify;">থ্রি-হুইলারচালক গৌতম রায় বলেন, বাস মালিক সমিতির সভাপতি অসীম দেওয়ান ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবিরের মধ্যে কোন্দল। অহেতুক থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে। তারা গাড়ি ভাঙছে, শ্রমিকদের মারছে, খাবার হোটেল লুট করছে।</p> <p style="text-align: justify;">গৌতমের দাবি, এতে তাদের ৩০-৩৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। সবাই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি জানান, তারা নথুল্লাবাদ থেকে সাতটি পথে থ্রি-হুইলার চালান। এ ঘটনার ক্ষতিপূরণ না পেলে গাড়ি চালানো বন্ধ রাখবেন। </p> <p style="text-align: justify;">শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ‌নিবার দুপুর ১২টায় মাদারীপুর থেকে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস নথুল্লাবাদ টার্মিনালে প্রবেশ করে। এ সময় বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ানের অনুসারী নুরুল ইসলাম বাবাই মোটরসাইকেল নিয়ে সেই গাড়ির সামনে ছিলেন। বাসচালক সোহাগ তখন মোটরসাইকেল সরাতে হর্ন দেন। এতে ক্ষুব্ধ হন বাবাই। তিনি চালক সোহাগ ও হেলপার সৌরভকে মারধর করেন। </p> <p style="text-align: justify;">শ্রমিকরা সোহাগকে নিয়ে শের-ই-বাংলা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের ওপর আবার হামলা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাস টার্মিনালে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের কার্যালয়ে হামলা চালায়। </p> <p style="text-align: justify;">এ সময় তারা বাস টার্মিনালের বিভিন্ন কাউন্টারের সামনে ভাঙচুর করে। শ্রমিকরা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ঢুকে সেখানে একজন বহিরাগত শ্রমিককে মারধর করে। </p> <p style="text-align: justify;">পুলিশ এসে শ্রমিকদের শান্ত করে কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। পরে তারা সড়ক অবরোধ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। </p> <p style="text-align: justify;">বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির বলেন, সন্ধ্যার দিকে ঘটনা সমাধান করে বাস চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় আবার বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলার কারণে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান বলেন, শ্রমিকদের একটি গ্রুপ প্ররোচনা দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছে। তাই এখনো বাস চলাচল শুরু করা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস চলাচল শুরু করার চেষ্টা চলছে।</p> <p style="text-align: justify;">দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে বরিশাল নগরীর সাগরদী থেকে বৈদ্যপাড়া প্রবেশমুখ পর্যন্ত সড়কে বিপুসংখ্যক বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান আটকা পড়ে।</p>