<p>অসহায়-গরিবদের সাহায্য করা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রাসুল (সা.) সর্বপ্রথম যখন ওহির সংবাদ ও ভয় পাওয়ার কথা খাদিজা (রা.)-কে জানান, তখন তিনি রাসুল (সা.)-এর বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেন। খাদিজা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুণাবলি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর কসম, আল্লাহ আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৩)</p> <p>যারা অন্যের প্রয়োজন পূরণ করে, আল্লাহ তাআলা তাদের প্রয়োজন পূরণ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তাআলাও তার কল্যাণে রত থাকবেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৪৬)</p> <p>অন্য হাদিসে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি ব্যয় করো, আমিও তোমার প্রতি ব্যয় করব।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫২)</p> <p>মহান আল্লাহ তাঁর কোনো বান্দাকে সুযোগ-সুবিধা ও অভাব পূরণের ক্ষমতার মতো নিয়ামত দান করেন। অতঃপর যখন সে ওই নিয়ামত প্রাপ্ত হয়ে স্বীয় দায়িত্ব পালন না করে, তখন আল্লাহ তাআলা তার থেকে সেসব নিয়ামত উঠিয়ে নেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর জন্য নিবেদিত এমন অনেক বান্দা আছে যাদেরকে আল্লাহ তাআলা মানুষের উপকার করার জন্য বিশেষ নিয়ামত দান করেন। যতক্ষণ তারা সেগুলো মানবকল্যাণে ব্যয় করে ততক্ষণ তিনি তাদের সেসব নিয়ামতের মধ্যে বিদ্যমান রাখেন। কিন্তু যখন তারা সে উপকার করা বন্ধ করে দেয়, তখন তিনি তাদের থেকে নিয়ামত ছিনিয়ে নিয়ে অন্যদের দিয়ে দেন। (সহিহুত তারগিব, হাদিস : ২৬১৭)</p> <p>আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে দুনিয়ার কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো গরিব লোকের সঙ্গে (পাওনা আদায়ে) নম্র ব্যবহার করবে, আল্লাহ তার সঙ্গে দুনিয়া ও আখিরাতে নম্র ব্যবহার করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষত্রুটি গোপন করে রাখবে, আল্লাহও তার দোষত্রুটি দুনিয়া ও আখিরাতে গোপন রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্য করে, আল্লাহও ততক্ষণ তাঁর বান্দার সাহায্য করেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৬)</p> <p>বিপরীতে যে মানুষকে সাহায্য করে তার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘গরিব-মিসকিন ও অভাবী মানুষকে প্রতিহত করতে যে নেতা নিজের দরজা বন্ধ করে রাখে, তার দারিদ্র্য, অভাব ও প্রয়োজনের সময় আল্লাহ তাআলাও আকাশের দরজা বন্ধ করে রাখবেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৩৩২)</p>