<p style="text-align:justify">আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় থানার কার্যক্রমে পুলিশের টহল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ নিজেদের গাড়ি না থাকায় পাশের থানা থেকে ধার করা গাড়ি দিয়ে কোনোমতে চলছে এই কাজ। আগে টহলে যেখানে পাঁচটি গাড়ি ব্যবহার করা হতো, এখন সেখানে থাকছে দু-তিনটি। এসব গাড়ির অবস্থাও তেমন ভালো নয়।</p> <p style="text-align:justify"><img alt="পাশের থানার গাড়ি দিয়ে চলছে টহল" height="89" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/09.September/20-09-2024/8890.jpg" style="float:left" width="331" />গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বংশাল থানায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভাঙচুর ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত থানাগুলোর মধ্যে এই থানাও রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">থানার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ওসির জন্য বরাদ্দ একটি প্রাইভেট কার, পাঁচটি টহল গাড়ি এবং তিনটি ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরের পাশাপাশি নষ্ট করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি। লুট করা হয়েছে থানায় ব্যবহৃত তিনটি কম্পিউটার, বিপুল অস্ত্রসহ গোলাবারুদ। এককথায় ভবনটি ছিল পুরো ফাঁকা।</p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাড়া করা ভবনে পরিচালিত হচ্ছে থানার কার্যক্রম। এর মধ্যে জনসেবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে একটি কক্ষ। কক্ষের তিন দিকে তিনটি টেবিল এবং কিছু চেয়ার রাখা আছে। কক্ষটিতে আর কোনো আসবাব নেই। পুরো ফ্লোর ফাঁকা। তবে নতুন কক্ষটিকে সাজানোর কাজ চলছে। কক্ষটির এক কোণে কাচে ঘেরা একটি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া একাধিক কক্ষ নির্মাণের লক্ষ্যে জড়ো করা হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রী।</p> <p style="text-align:justify">কক্ষটি ঘুরে দেখা যায়, একটি টেবিলে দুজন পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। অন্য একটি টেবিলে বসে ভুক্তভোগীদের সেবা দিচ্ছেন ডিউটি অফিসার। এ সময় দু-তিনজন অভিযোগকারীকে আসতে দেখা গেছে। পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিও ছিল কম।</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, কিছু সাধারণ ডায়েরি (জিডি) তালিকাভুক্ত করা হলেও আগের মতো সেবাগ্রহীতা নেই। এখন মামলার হারও অনেক কম। বিশেষ করে পুলিশ বাদী হয়ে আগে যেসব মামলা করত, সেগুলো এখন পুরোপুরি বন্ধ। মাদক মামলা এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত যে অভিযান পরিচালনা করা হতো, সেগুলোও হচ্ছে না। গণ-অভ্যুত্থানের পর প্রথম দিকে রাজনৈতিক মামলা থাকলেও এখন সেগুলোও আসছে না।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে ডিউটি অফিসার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, মামলার হার কিছুটা কমলেও আগের মতোই ভুক্তভোগীরা আসছে। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি জিডি নথিভুক্ত করা হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">অন্যদিকে কর্মপরিবেশ অনেকটাই স্বাভাবিক বলে দাবি করেছেন থানার ওসি আতিকুর রহমান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, এখন মাঠ পর্যায়ে কাজ করতেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের টহলের গাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এগুলো মেরামত করতে ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। এখন অন্য থানাগুলো থেকে গাড়ি এনে টহলের কাজ চলছে। যদিও এসব গাড়ির অবস্থা তেমন ভালো নয়। চুরি হওয়া অস্ত্রের মধ্যে কিছু উদ্ধার করা হয়েছে, বাকিগুলো উদ্ধারে অভিযান চলছে। নিয়মিত বদলিজনিত কারণে জনবলের কিছু ঘাটতির কথা স্বীকার করলেও সেবাদানে ঘাটতি নেই বলে দাবি করেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">এর আগে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর বন্ধ হয়ে যায় থানার কার্যক্রম। এর ১০ দিন পর পুনরায় কার্যক্রম শুরু করা হলেও নানা সংকটে এখনো ঢিমেতালে চলছে জনসেবা। টহলের গাড়ির সংকট, জনবলসংকট, কম্পিউটারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবের সংকটে সেবাদান কার্যক্রম এখনো স্বাভাবিক ধারায় ফেরেনি।</p>