<p>মুমিনরা পরস্পর ভাই-ভাই। তারা একে অন্যকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে, এটা ঈমানের অন্যতম দাবি। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য মুসলমানদের পারস্পরিক ভালোবাসার বহু ফজিলত আছে। এ বিষয়ে  এখানে কিছু তুলে ধরা হলো—</p> <p><strong>১. ঈমানের স্বাদ পাওয়া যায় :</strong> আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, যার মধ্যে তিনটি গুণ বিদ্যমান, সে ঈমানের স্বাদ পাবে—(ক) যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সর্বাধিক ভালোবাসে, (খ) যে শুধু আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে এবং (গ) আল্লাহ যাকে কুফরি থেকে মুক্তি দিয়েছেন, সে কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে এমনভাবে অপছন্দ করে, যেভাবে অপছন্দ করে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ হওয়াকে। (বুখারি, হাদিস : ৫৮২৭, মুসলিম, হাদিস : ৯৪)</p> <p><strong>২. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ :</strong> কোনো মুসলমানকে ভালোবাসার কারণে তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি তার কোনো (মুসলমান) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অন্য গ্রামে রওনা হয়, পথে আল্লাহ তার জন্য একজন ফেরেশতা বসিয়ে দেন। অতঃপর ফেরেশতা তাকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে এমন ভালোবাসেন, যেমন তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসো। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৭)</p> <p><strong>৩. আল্লাহর সাহায্য লাভ :</strong> আল্লাহর জন্য কোনো মুমিনকে ভালোবেসে তার কোনো সাহায্যে এগিয়ে এলে আল্লাহ তার জন্য অনুরূপ সাহায্য নিয়ে হাজির হন।রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কোনো বিপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার কোনো একটি কঠিন বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্ত মানুষের অভাব সহজ করে দেবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার অভাব সহজ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ততক্ষণ পর্যন্ত সহযোগিতা করেন, যতক্ষণ সে তার অন্য ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৯)</p> <p><strong>৪. ঈমানের পূর্ণতা লাভ : </strong>আবু ইমামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে, আর আল্লাহর জন্য কারো সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করে এবং আল্লাহর জন্যই দান-খয়রাত করে আবার আল্লাহর জন্যই দান-খয়রাত থেকে বিরত থাকে, সে যেন ঈমান পূর্ণ করল। (আবু দাউদ, মিশকাত, হাদিস : ৩০)</p> <p><strong>৫. আখিরাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ : </strong>রাসুল (সা.) বলেন, মহা সম্মানিত পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন, আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য (পরকালে) থাকবে নূরের মিম্বার, যা দেখে নবী ও শহীদরা ঈর্ষা করবেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯০)</p> <p><strong>৬. কিয়ামতের দিন আরশের নিচে স্থান : </strong>রাসুল (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন বলবেন, আমার মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরস্পরকে যারা ভালোবেসেছিল তারা কোথায়? আজ আমি তাদের ছায়া দেব আমার ছায়াতলে, যেদিন কোনো ছায়া নেই আমার ছায়া ছাড়া। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৬)</p> <p>মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টির জন্য মানুষকে ভালোবাসার তাওফিক দান করুন। আমিন।</p>