<p>তীব্র গরমে গাইবান্ধাবাসীর নির্মল বিনোদনের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে সদরের খোলাহাটি ইউনিয়নের ভেড়ামারা রেল ব্রিজের নিচে শুকিয়ে ক্ষীণ হয়ে যাওয়া ঘাঘট নদ। একই সঙ্গে বেড়ানো এবং পানির শীতল পরশ নিতে সেখানে ভিড় করছে বহু মানুষ। তিরতির করে বয়ে চলা ঘাঘটের বুক সমান পানিতে শরীর ডুবিয়ে অনায়াসে কাটিয়ে দিচ্ছে কয়েক ঘণ্টা। জেগে ওঠা পাথরে বসে ছবি তুলে কিংবা ভিডিও করে ছড়িয়ে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভালোবেসে স্থানীয় লোকজন এই জায়গার নাম দিয়েছে ‘গরিবের রোমান্টিক জাফলং’।</p> <p>জেলা শহর থেকে সামান্য দূরে খোলাহাটি ইউনিয়নের ভেড়ামারা রেল ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘট নদের মূলধারা। যেটি কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। শুকিয়ে যাওয়ায় এখন নদের মধ্যভাগে কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও কোমর সমান পানি। ব্রিজ রক্ষায় বহু বছর আগেই সেখানে তলদেশে ফেলা হয়েছে পাথর। ক্রমে স্রোতের ধাক্কায় পাথরগুলো ক্ষয়ে ক্ষয়ে অনেকটাই সাদা। সেখানেই দিনভর পানির শীতল স্পর্শ নিতে ভিড় করছে অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশু। ক্ষীণ স্রোতের ধারায় শরীর ডুবিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে হৈ-হুল্লোড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ছে সবার কাছে। দল বেঁধে আশপাশের জেলা উপজেলাগুলো থেকেও আসছে মানুষ। তবে তরুণ-তরুণীদের ভিড়ই সবচেয়ে বেশি।</p> <p>এখানে বেড়াতে আসা সংগীতশিল্পী নিগার নাইম তমা বলেন, ‘এখানে এসে মনে হচ্ছে এক অপরূপ সৌন্দর্যের ভেতরে রয়েছি। পাথর, পানির হালকা স্রোতের শীতল পরশ গরমের তীব্রতা কমিয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ভেড়ামারা ব্রিজের ওপর দিয়ে ট্রেন চলছে। দেখতে দেখতে শৈশবে ফিরে যাচ্ছি।’ কবিতাকর্মী বাহার উদ্দীন জানালেন, প্রচণ্ড গরমে স্বস্তি দিচ্ছে ঘাঘটের শীতল পানি। পানির ভেতর ভেসে থাকা পাথর মনে করিয়ে দিচ্ছে সিলেটের জাফলংয়ের স্মৃতি। তাই মুখে মুখে রাষ্ট্র হয়ে গেছে ‘গরিবের জাফলং’ নামটি।</p> <p>স্থানীয় লোকজন জানায়, এ বছরের বর্ষায় আবারও প্রমত্তা হয়ে উঠবে ঘাঘট। তখন হয়তো শরীর ভেজানোর এই আনন্দ পাওয়া যাবে না। এর পরও বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের এই উত্তপ্ত দিনে ঘাঘট নদের রূপ মুগ্ধ করছে সবাইকে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাসুম হক্কানী বলেন, ‘প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে দাবদাহ থেকে বাঁচতে এবং নির্মল আনন্দের আশায়। তাঁর পরিষদ এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।’</p> <p> </p>