<p>সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ এনায়েতপুর কেজির মোড়ের ব্যস্ততম সড়কের যাত্রীছাউনিটি বেদখল হয়ে গেছে। এলাকার আইসিএল স্কুলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে যাত্রীসাধারণের জন্য নির্মিত যাত্রীছাউনিটি দখল করে ঢাকাগামী অভি এন্টারপ্রাইজ, নওগাঁগামী লিজা এন্টারপ্রাইজ ও কুড়িগ্রামগামী অপরূপা পরিবহনের টিকিট কাউন্টার বানানো হয়েছে। তাই দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। </p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ সড়কটি প্রায় ২৮ কিলোমিটার। প্রতিদিন এ পথে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। জেলা শহর ও ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা হওয়ায় এনায়েতপুর কেজির মোড়ে রয়েছে বাসস্ট্যান্ড। এ ছাড়া খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় ও খাজা ইউনুস আলী (রহ.) মাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে এ এলাকায়। তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ এলাকা হওয়ায় কাপড় কেনা থেকে শুরু করে এখানে সারা দেশের মানুষই বিভিন্ন কারণে এসে থাকে। তাই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম। দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষার লক্ষ্যে প্রায় ১০-১২ বছর আগে জেলা পরিষদ এনায়েতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে একটি যাত্রীছাউনি নির্মাণ করে। সেখানে ক্লান্ত যাত্রীরা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারত। তবে তিন বছর আগে এলাকার আইসিএল স্কুলের প্রচারণা ব্যানার ঝুলিয়ে যাত্রীছাউনিটি দখল করেন ওই বিদ্যালয় পরিচালকদের বড় ভাই মোনায়েম হোসেন। সেখানে কয়েকটি দূরপাল্লা বাসের টিকিট কাউন্টার বানিয়েছেন তিনি। এর পর থেকে যাত্রীদের জন্য আর ছাউনিটি উন্মুক্ত থাকে না। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও দূর থেকে আসা যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই।</p> <p>সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটবারের কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। বাস থেকে মালামাল নিয়ে নামলেও একটু বিশ্রাম নেওয়ার মতো স্থান পাচ্ছে না যাত্রীসাধারণ। পাশেই যাত্রীছাউনি থাকলেও সেখানে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সামনে ঝুলছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রচারণা বিজ্ঞাপন। সেখানে টিকিট কিনতে ভিড় করছে লোকজন।</p> <p>এ ব্যাপারে খোকশাবাড়ী গ্রামের আব্দুস ছোবহান, গোপালপুর গ্রামের হাসেন আলী ও ঢাকা থেকে হাসপাতালগামী আনোয়ার হোসেন বলেন, এত গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল জায়গার একমাত্র যাত্রীছাউনিটি যে এভাবে দখল হবে, তা কখনো ভাবিনি।</p> <p>যাত্রীছাউনি দখলদার এনায়েতপুর গ্রামের আব্দুল মোনায়েম বলেন, ‘কার কী, আমি তা জানি না। ন্যায়-অন্যায়ও বুঝি না। উন্মুক্ত অবস্থায় ঘরটি পেয়েছি, তা ব্যবহার করছি। কেউ কোনো দিন সরাতে বলেনি।’</p> <p>এদিকে যাত্রীছাউনি দখলের বিষয়ে আইসিএল স্কুলের পরিচালক শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বড় ভাই জীর্ণ যাত্রীছাউনিটি মেরামত করে কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করছেন। এ জন্য কেউ কিছু বলেনি বলেই তিনি কাউন্টার বানিয়েছেন।’ যাত্রীছাউনি দখলমুক্ত করার বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু তাহির জানান, এটি দখলমুক্ত করতে অতিসত্বর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>