ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

নেইমারকে বাংলাদেশে আনবেন রবিন, তবে...

  • নেইমারের পরিবারের সঙ্গে এখন কাতারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রবিন মিয়া। বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাড়ি তাঁর। নেইমারের ভালো বন্ধু তিনি। পৃষ্ঠপোষক পেলে এই ব্রাজিলিয়ান তারকাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে চান। হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
নেইমারকে বাংলাদেশে আনবেন রবিন, তবে...
নেইমারের সঙ্গে রবিন (সবার ডানে) ছবি : সংগৃহীত

রবিনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কালিকা প্রাসাদ ইউনিয়নের গাজীরটেক গ্রামে। বাবা হাজি আব্দুস সাত্তার। মা জাহানারা বেগম। এই দম্পতির সাত সন্তানের মধ্যে রবিন সবার ছোট।

তাঁর বড় ভাই হুমায়ুন কবির ব্রাজিলে থাকেন। রবিন একসময় ঢাকা সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন। এইচএসসির পর উচ্চশিক্ষার জন্য বছর পনেরো আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন ব্রাজিলে। পরে সেখানে কৃষি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন।
এখন স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকেন।

 

নেইমারের সঙ্গে পরিচয়

ব্যবসার সূত্রে রবিনের পরিচয় হয় জোয়াও সেলসোর নামের এক ব্রাজিলিয়ানের সঙ্গে। সেলসোর তাঁর ভালো বন্ধু। এই সেলসোরের মাধ্যমেই নেইমারের বাবা নেইমার সান্তোস সিনিয়রের সঙ্গে পরিচয় ঘটে রবিনের।

রবিনকে ভালো লেগে যায় তাঁর। তিনিই পরে ছেলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। একসময় তা রূপ নেয় ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে। এখন জোয়াও সেলসোর ও রবিন নেইমারের প্রচারণার কাজে যুক্ত। রবিন বলেন, ‘অনেক দেশে নেইমারের প্রচারের কাজটা করি আমি আর জোয়াও।
নেইমারের ফেসভ্যালু ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক কম্পানি বা ব্র্যান্ড ব্যবসার প্রচার ও প্রসার চায়। তারা আমাদের কাছে আসে। আমরা প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করি। নেইমারের সঙ্গেও আলাপ হয়। পরে সেখান থেকে পছন্দসই কম্পানিকে নেইমারের পক্ষে প্রস্তাব পাঠাই।’  বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে নেইমারের পরিবারের সদস্যরা এখন কাতারে। তাদের লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়ার কাজে ব্যস্ত রবিন। 

নেইমারের বাবার সঙ্গে রবিন

রবিনের ছেলের জন্য নেইমারের শুভেচ্ছা

১৫ নভেম্বর ছিল রবিনের চার বছর বয়সী ছেলে রেদোয়ানের জন্মদিন। নেইমার সেটাও মনে রেখেছিলেন। তিনি সেদিন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে রেদোয়ানের উদ্দেশে ভিডিও বার্তাও পাঠিয়েছেন। দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিও বার্তায় নেইমারের পাশাপাশি রবিনকে দেখা গিয়েছিল। এই ভিডিওর বদৌলতেই মূলত রবিন আলোচনায় আসেন। রবিনের বড় ভাই মো. মামুন বলেন, নেইমারের সঙ্গে রবিনের বন্ধুত্বের বিষয়টি এত দিন সেভাবে জানতাম না। রেদোয়ানের জন্মদিনে ভিডিও বার্তা দেওয়ার পর অনেকের মতো আমরাও জানলাম।’ মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে ১৮ নভেম্বর দেশে এসেছিলেন রবিন। তখন এলাকার মানুষ রবিনকে দেখতে তাঁদের বাড়িতে ভিড় করে। তারা রবিনের মুখে নেইমারের গল্প শোনে। অবশ্য এক দিন পরই কাতার ফিরে গেছেন তিনি। ফেরার পথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবালকে নেইমারের স্বাক্ষর করা জার্সি উপহার দিয়েছেন।

 

 নেইমার ও তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে

মানুষ হিসেবে নেইমার কেমন

রবিন মিয়া এখন শুধু নেইমারের বন্ধুই নন, তাঁদের পরিবারের একজন হয়ে গেছেন। নেইমারের বাবা, বোনেরা তাঁকে খুব আদর করেন। নেইমারের বোন রাফায়েলও জন্মদিনে তাঁর ছেলেকে উপহার পাঠিয়েছেন। রবিনের ভাষায়, নেইমারের মা-বাবা সাদা মনের মানুষ। ব্রাজিলে প্রায় তিন হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে খাওয়ান-পরান। তাদের খেলার সরঞ্জামও দেন।

খেলোয়াড় নেইমারকে তো সবাই চেনে। কিন্তু মাঠের বাইরের নেইমার আসলে কেমন?

রবিন কাছ থেকে দেখেছেন নেইমারকে। তিনি বলেন, ‘আপনারা খেলোয়াড় হিসেবে নেইমারকে চেনেন। কিন্তু আমি চিনি বন্ধু হিসেবে। তিনি একজন সহজ মানুষ। আমি কোনো সেলিব্রিটি নই, ফুটবলারও নই। ধনী পরিবার থেকেও উঠে আসিনি। কিন্তু নেইমারের ব্যবহারে তা বোঝা যায় না। আর সবার মতোই তিনি ও তাঁর পরিবার আমার সঙ্গে মেশে। তিনি সব সময় সবাইকে হাসিখুশি রাখতে চান। প্রায় সবার সঙ্গেই মজা করেন। আমরা একসঙ্গে খেয়েছি, কার্ডও খেলেছি। সহজেই মানুষকে আপন করে নেওয়ার দারুণ গুণ আছে তাঁর। বাসায় দশজন বন্ধু এলে তিনি সবার প্রতি খেয়াল রাখেন। যেকোনো বিষয়ে নিজে জেতার চেয়ে অন্যকে জিততে দেখলে বেশি খুশি হন। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দেরও যথেষ্ট সম্মান করেন। মেসিকে লিও বলে ডাকেন। কখনো লিও সম্পর্কে তাঁকে বাজে কিছু বলতে শোনা যায়নি।’

 

নেইমারের অটোগ্রাফসহ জার্সি দিচ্ছেন তামিমকে

বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেন নেইমার

এ দেশের অগণিত ভক্তের কথা নেইমারকে জানিয়েছেন রবিন। এসংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিও দেখিয়েছেন। বাংলাদেশ সম্পর্কেও বলেছেন। রবিন বলেন, ‘এ দেশে তাঁর অসংখ্য ফ্যান-ফলোয়ার রয়েছে জেনে নেইমার খুব আপ্লুত। বাংলাদেশের মানুষের এমন আগ্রহের ব্যাপারে প্রথমে নেইমারের বাবার সঙ্গে আলাপ করেছিলাম। জেনে তাঁরা খুব অবাক হয়েছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে নেইমার এবং ব্রাজিল দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তাই পৃষ্ঠপোষক পেলে নেইমারকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে চাই।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ