ময়মনসিংহ নগরীতে চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এসব অপরাধের ঘটনা। পুলিশ তৎপর হলেও কমছে না অপরাধীদের তৎপরতা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, অপরাধের ধরন ও সংখ্যার তুলনায় বর্তমানে ময়মনসিংহে চৌকস ও অভিজ্ঞ পুলিশের সংখ্যা কম।
ময়মনসিংহ নগরীতে চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এসব অপরাধের ঘটনা। পুলিশ তৎপর হলেও কমছে না অপরাধীদের তৎপরতা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, অপরাধের ধরন ও সংখ্যার তুলনায় বর্তমানে ময়মনসিংহে চৌকস ও অভিজ্ঞ পুলিশের সংখ্যা কম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত এক সপ্তাহেই নগরীতে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ১৬ জুন নগরীর ক্লিনিক মালিক সমিতি চিহ্নিত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে চরপাড়া এলাকায় মানববন্ধন করে। এর আগে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে। ক্লিনিক মালিকরা জানান, নিরীহ ক্লিনিক মালিকদের চিহ্নিত চাঁদাবাজরা নিয়মিত অত্যাচার করে আসছে।
গত বুধবার সকালে নগরীর ব্যস্ততম এলাকা গাঙ্গিনার পাড়ে শপিং মল ‘অলকা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের’ দ্বিতীয় তলায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। এই চুরির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ভাইরাল।
ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে নগরীর জিলা স্কুলসংলগ্ন এক বাসায়। বাসার মালিক ময়মনসিংহের একটি হোটেলের মালিক মোসা খন্দকার। এই ঘটনায় থানায় দেওয়ায় অভিযোগে বলা হয়, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে অজ্ঞাতপরিচয় দুই-তিন জন ব্যক্তি বাসায় প্রবেশ করে মোসা খন্দকারকে বেঁধে ফেলে। এরপর ২৩ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহের সম্পাদক ইয়াজদানী কোরাইশী কাজল বলেন, ‘একজন নাগরিক হিসেবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো সামপ্রতিক সময়ে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। আগের তুলনায় পরিস্থিতি কিছুটা নাজুক বলে মনে হচ্ছে।’
ময়মনসিংহ ক্লিনিক মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি ও ময়মনসিংহ নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব শামসুজজোহা মাসুম বলেন, সামপ্রতিক সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পুলিশকে আরো তৎপর হতে হবে। সামাজিকভাবেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সংঘটিত ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। অনেকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তারও হয়েছে।’
সম্পর্কিত খবর
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।
সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।
গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।