<p>চলমান তীব্র দাবদাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। এতে দেশের এই প্রধান অর্থকরী ফল উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আম ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বলছেন, এ বছর শুরু থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে  তাঁরা আমের কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। চলমান দাবদাহ তাঁদের সেই চিন্তাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে সেচের কারণে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।</p> <p>চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। আম চাষিরা বলছেন, বর্তমানে জেলার সব আমবাগানে সেচের দরকার হলেও অনেক জায়গায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় বাগানে সেচ দিতে পারছেন না অর্ধেকেরও বেশি আম চাষি ও বাগান মালিক। এটি আম উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।</p> <p>চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আম উৎপাদনকারী ও বাগান মালিক ইসমাইল খান শামীম, আতিকুর রহমান মিলন, মাসুদ রানা, আবু নুহুসহ অনেকে জানান, এ বছর খরার কারণে আমের গুটি বড় হচ্ছে না। বোঁটা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। সেচ দিয়েও বিশেষ কাজ হচ্ছে না, শ্যালো যতক্ষণ চলছে ততক্ষণ, পানি শুষে নিচ্ছে। তা ছাড়া এভাবে সেচ দিতে অনেক খরচ। আবার অনেক স্থানেই পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শ্যালো মেশিনেও সেচের জন্য পানি উঠছে না।</p> <p>শিবগঞ্জ উপজেলা ম্যাঙ্গো ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এ বছর তীব্র শীতের কারণে আমের মুকুল এমনিতে দেরিতে এবং কম আসে। তার ওপর গত মাসে অসময়ের বৃষ্টিতে প্রায় ৩৫ শতাংশ মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। বাকি যা ছিল এখন বৃষ্টির অভাবে তা-ও ঝরে যাচ্ছে। দাবদাহ আরো কিছুদিন চললে আরো ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’ </p> <p>এদিকে বাগানের সঠিক পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়া ও দাপদাহ যত দিন চলমান থাকবে তত দিন বাগানে পর্যাপ্ত সেচ দেওয়া, তাপমাত্রা আরো বাড়লে সকালে বা বিকেলে গাছে সরাসরি পানি ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ ও আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘চাঁঁপাইনবাবগঞ্জের বড় গাছগুলোতে এবার মুকুল কম এসেছে।  তবে ছোট গাছগুলোতে ভালোই মুকুল আছে।’</p> <p>শিবগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা সুনাইন বিন জামান বলেন, ‘আম চাষি ও বাগান মালিকদের দাবদাহের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে বাগানের পরিচর্যা করা গেলে, কৃষি বিভাগ যে সাড়ে চার লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে তার অন্তত কাছাকাছি যাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা।’</p>